মোঃ মনির মন্ডল,সাভার সংবাদদাতা :
ঈদের ছুটি শেষে আবারও চেনা রূপে ফিরেছে শিল্পাঞ্চল সাভার ও আশুলিয়া। দীর্ঘ ছুটি শেষে কর্মস্থলে যোগ দিতে গত দুই দিন ধরে সাভারে ফিরেছে কর্মমুখী মানুষ।
আর ফিরেই যুক্ত হয়েছে কর্মযজ্ঞে, তারা পুরোদমে শুরু করেছে উৎপাদন।
রোববার (১৫ জুন) সকালে সাভার ও আশুলিয়ার ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক, নবীনগর-চন্দ্রা সড়ক, বাইপাইল ও জামগড়ার বিভিন্ন এলাকায় কর্মজীবীদের স্রোত দেখা গেছে।
তারা কাজে যোগ দিতে একের পর এক কারখানায় প্রবেশ করছেন। বিভিন্ন পোশাক কারখানাগুলোর ফটকে দেখা মিলেছে শ্রমিকদের লম্বা সারি। এ যেন চিরচেনা সাভারের চিত্র।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিল্পাঞ্চল সাভারের প্রায় শতভাগ পোশাক কারখানায় উৎপাদন শুরু হয়েছে।
এসব শিল্প কলকারখানায় প্রায় ৯৮ শতাংশ শ্রমিক কাজে যোগ দিয়েছেন। ফলে শিল্পাঞ্চল সাভার ও আশুলিয়ায় পুরোদমে উৎপাদন শুরু হয়েছে। তবে এখনও কর্মস্থলে ফিরছেন কিছু সংখ্যক শ্রমিক। অনেকেই যানজটে আটকে সঠিক সময়ে কর্মস্থলে যোগ দিতে পারেন নাই। বাধ্য হয়েই বাসের ছাদে যাত্রা করেছেন অনেকেই।
আশুলিয়ার একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিক রাকিব হোসেন বলেন, গ্রামে ছুটি ভালোই কেটেছে। ছুটিও ছিল বেশ দীর্ঘ। তাই হাতে দুই দিন সময় নিয়েই কর্মস্থলে ফিরেছি। যদিও যানজটে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হয়েছে। তার পরেও সঠিক সময়ে কাজে যোগ দিতে পেরেছি। গ্রাম যাওয়ার সময় যেমন পরিবহন সংকট দেখা দিয়েছিল, ফেরার পথেও যানজটে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। অনেকে বাসের ভেতরে দাঁড়িয়ে, কেউ বাসের ছাদে করে গন্তব্যে ফিরেছেন। অবশেষে তারা কাজে যোগ দিতে পেরেছেন।
শ্রমিক তাসলিমা খাতুন বলেন, আমরা অনেক কষ্টে আজ ভোরে সাভারে ফিরেছি। সড়কে দীর্ঘ যানজট, পরিবহনের অতিরিক্ত চাপ সব মিলিয়ে ভোগান্তিতে ফিরতে হয়েছে। অনেকেই এখনও যানজটে আটকে আছে বলেও জেনেছি। কারখানায় ৯০ শতাংশের বেশি শ্রমিক যোগ দিয়েছেন। যারা এখনও যোগ দিতে পারেন নাই তারা যানজটে আটকে রয়েছে। তারাও কর্মস্থলে যোগ দেবেন। সবাই আনন্দমুখর পরিবেশে উৎপাদন শুরু করেছেন। আমরা ছুটির পর পুরোদমে কাজ শুরু করে দিয়েছে।
যানজটে আটকে পড়া শ্রমিক আল-আমিন বলেন, শনিবার (১৪ জুন) রাতে আমি রওয়ানা করেছি। সড়কে যানজটে আটকে আজও কর্মস্থলে ফেরা হয়নি। এখনও বাসের ছাদে কর্মস্থলে ফেরার চেষ্টা করছি। আশা করি দ্রুতই কারখানায় উপস্থিত হতে পারবো। আজ একটু দেরিতে কারখানায় গেলে সমস্যা হবে না। আমি তো ইচ্ছে করে দেরি করছি না।
একটি পোশাক কারখানা উৎপাদন কর্মকর্তা মো. রাজিব বলেন, আমাদের কারখানায় পুরোদমে উৎপাদন শুরু হয়েছে। কারখানায় শতভাগ শ্রমিকের উপস্থিতির দিকে জোর দিয়ে আমরা নানা ধরনের ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। তার মধ্যে সবার আগে কারখানায় যোগ দেওয়া শ্রমিকের জন্য পুরস্কার, এছাড়া সব শ্রমিকদের জন্য লটারির মাধ্যমে পুরস্কারের ব্যবস্থা করা। তাই কারখানা খোলার প্রথম দিনেই আমাদের শতভাগ কর্মী কাজে যোগ দিয়ে থাকেন। ফলে পুরোদমে উৎপাদন সম্ভব হয়।
এ ব্যাপারে শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মো. মোমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, আজ থেকে শতভাগ কারখানায় উৎপাদন শুরু হয়েছে। তবে কয়েকটি কারখানায় শ্রমিক ছাঁটাই হয়েছে। এছাড়া শিল্পাঞ্চল এখন পর্যন্ত স্বাভাবিক রয়েছে। শিল্পাঞ্চলে আমাদের শক্ত নজরদারি রয়েছে।