বাংলা ভয়েস ডেস্ক :

ঢাকার (কেরানীগঞ্জ) কেন্দ্রীয় কারাগারে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলাকারী সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সুজন (৪৫) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

অচেতন অবস্থায় কারারক্ষীরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে কারা হাসপাতাল এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। গতকাল রবিবার বেলা ১১টার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সূর্যমুখী ভবনের একটি কক্ষে লুঙ্গি গলায় পেঁচিয়ে ফাঁস দেন সুজন।

ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক জানান, মৃত সুজনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক মর্গে রাখা হয়েছে।

গতকাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন্স) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন জানান, সাইদুর রহমান সুজন ডিটেনশনে সূর্যমুখী ভবনের একটি কক্ষে ছিলেন। সকালে সুজন নাশতাও করেছেন। ওই কক্ষে তিনজন বন্দি, একজন আদালতে গিয়েছিলেন, অপরজন ঘুমিয়ে ছিলেন। এই সুযোগে সুজন নিজের লুঙ্গি গলায় পেঁচিয়ে জানালার সঙ্গে গলায় ফাঁস দেন। পরে তাকে কারা হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে মারা যান।

তিনি আরও জানান, তার বিরুদ্ধে অনেক মামলা আছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনেরও মামলা আছে। তবুও কারা অভ্যন্তরে আত্মহত্যার ঘটনা কীভাবে হলো, এই বিষয়ে একটি কমিটি করে তদন্ত করে দেখা হবে।
কারা অধিদপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (ডেভেলপমেন্ট) জান্নাতুল ফরহাদ জানান, কারা অভ্যন্তরে বন্দির আত্মহত্যার ঘটনায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার এবং ডিআইজি প্রিজন্স পৃথক দুটি তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার কথা রয়েছে। ওই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ দিলে আলাদা একটি কমিটি গঠন করে ঘটনার তদন্ত করে দেখা হবে।
সুজনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলাসহ মোট ১৫টি মামলা রয়েছে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান চলাকালে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান সুজনকে প্রকাশ্যে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি ছোড়ার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া এলাকায় জমি দখলসহ আধিপত্য বিস্তারের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে জুলাই বিপ্লবের আগে থেকেই একাধিক অভিযোগ পাওয়া যায়।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী শাসনের পতন ও স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেলে সুজনও আত্মগোপনে চলে যান। তবে গত জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে রাজধানীর উত্তরার একটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

Exit mobile version