আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি জোরদার করতে সম্ভাব্য প্রার্থীদের হঠাৎ ঢাকায় ডেকেছে বিএনপি। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনে প্রার্থী চূড়ান্তকরণ, কৌশল নির্ধারণ এবং ভোটারদের কাছে দলের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে ঘোষিত ২৭২টি আসনের সম্ভাব্য একক প্রার্থীদের গুলশানে বৈঠকে ডাকা হয়েছে।
আজ থেকে রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এসব প্রার্থীদের নিয়ে তিন দিনব্যাপী ধারাবাহিক সভা অনুষ্ঠিত হবে।
এই সভাগুলোতে নির্বাচনী প্রচারণা কৌশল, মাঠ পর্যায়ে সংগঠনকে সক্রিয় রাখা এবং ভোটকেন্দ্রিক বিভিন্ন দিকনির্দেশনা প্রদান করা হবে। পাশাপাশি বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কোন কোন খাতে কীভাবে কাজ করবে, সে বিষয়েও প্রার্থীদের স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হবে। দলীয় সূত্র জানায়, মূলত ফ্যামিলি কার্ড, কৃষক, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ক্রীড়া, পরিবেশ, কর্মসংস্থান এবং ধর্মীয় নেতাদের উন্নয়ন—এই আটটি খাতকে সামনে রেখে ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে প্রার্থীদের নির্দেশনা দেওয়া হবে। প্রচারে নেমে এসব প্রতিশ্রুতি সাধারণ মানুষের কাছে গুরুত্ব সহকারে তুলে ধরার জন্য প্রার্থীরা বিশেষ তাগিদ পাবেন।
তবে নির্বাচনের আগে বিএনপির ভেতরে মনোনয়ন সংক্রান্ত অভ্যন্তরীণ কোন্দল এখনো পুরোপুরি কাটেনি। সারাদেশে অন্তত ৪৫টি আসনে ঘোষিত সম্ভাব্য প্রার্থীর বিরুদ্ধে দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রকাশ্যে অসন্তোষ, বিক্ষোভ এবং লিখিত অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগকারীদের ভাষ্য অনুযায়ী, অনেক ক্ষেত্রে দীর্ঘদিনের আন্দোলন-সংগ্রামে যুক্ত ত্যাগী ও তুলনামূলকভাবে ক্লিন ইমেজের নেতাদের বাদ দিয়ে বিতর্কিত বা স্থানীয়ভাবে অগ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এতে তৃণমূলের ক্ষোভ বাড়ছে, যা দীর্ঘস্থায়ী হলে নির্বাচনী ফলাফলে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, মিত্রদের সঙ্গে আসন ভাগাভাগির বিষয়টি এখনও নিষ্পত্তি হয়নি। তবে বিএনপি যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলোর সঙ্গে সমন্বয় রেখেই নির্বাচনে যেতে চায়। দলীয় সূত্র অনুযায়ী, স্থানীয় জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতার কারণে যদি কোনো আসন ছাড় দেওয়া সম্ভব না হয়, তবে সেক্ষেত্রে মিত্র দলের শীর্ষ নেতাদের উচ্চকক্ষে মূল্যায়নের বিষয়টি বিবেচনায় রাখা হতে পারে।
সব মিলিয়ে পরিবর্তনের রাজনীতির বার্তা নিয়ে ভোটের মাঠে নামতে চায় বিএনপি। ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জুলাই জাতীয় সনদের সমন্বয়ে দলটির নির্বাচনী ইশতেহার চূড়ান্ত করা হচ্ছে। এই ইশতেহার বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ এবং সাংগঠনিক ঐক্য নিশ্চিত করতে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে চলমান এই বৈঠকগুলোকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।


















