নিজস্ব সংবাদদাতা :
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য এম নাসের রহমান বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে পরিকল্পিতভাবে বিষ প্রয়োগে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। এ ঘটনায় একটি পরাশক্তি বিষয়টি ধরে ফেলায় ষড়যন্ত্রটি ভেস্তে যায়।
মঙ্গলবার রাতে লন্ডনের হোয়াইটচ্যাপেলের মাইদা গ্রিল হলরুমে যুক্তরাজ্য বিএনপির মৌলভীবাজার জেলা শাখা আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নাসের রহমান দাবি করেন, “ভারতের সেনাবাহিনীর একজন মেজর কারারক্ষীর ছদ্মবেশে এক বছর ধরে খালেদা জিয়ার জেলখানায় ছিলেন। তার দায়িত্ব ছিল ইসরায়েল যেভাবে ইয়াসির আরাফাতকে বিষ প্রয়োগে হত্যা করেছিল, সেভাবেই খালেদা জিয়াকে বিষ প্রয়োগে হত্যার। কিন্তু এক মাসের মধ্যেই বিষয়টি ধরে ফেলা হয়। যদিও ততদিনে কিছুটা বিষক্রিয়া হয়ে গিয়েছিল, যার প্রভাব তার লিভারে পড়ে।”
তিনি আরও বলেন, “এই হাসিনা ডাইনি বলেছিল মদ খেলে লিভার সিরোসিস হয়। অথচ সত্যিটা হচ্ছে, ম্যাডামের লিভার সিরোসিস হয়েছে তাকে বিষ প্রয়োগ করার কারণেই। এখন লন্ডনে উন্নত চিকিৎসা নিচ্ছেন, অনেকটাই সুস্থ আছেন।”
খালেদা জিয়াকে ‘মাদার অব ডেমোক্রেসি’ আখ্যা দিয়ে নাসের রহমান বলেন, “তাঁর অবদান ইতিহাসে অম্লান থাকবে। তিনি জীবনের সবচেয়ে বড় ত্যাগ স্বীকার করেছেন। আজকে বাংলাদেশের নতুন রাজনৈতিক দিগন্তে অগ্রসর হওয়ার পথে তারেক রহমানের নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।”
তিনি আরও বলেন, “গত সাড়ে পনেরো বছর আমরা একটি ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী শাসনের অধীনে ছিলাম। এই সময়ে বিএনপির লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মী জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, সবচেয়ে বেশি গুম, খুন, গ্রেফতার এবং মামলার শিকার হয়েছেন।”
সম্প্রতি ছাত্র জনতার আন্দোলনের বিষয়ে মন্তব্য করে নাসের বলেন, “মাত্র তিন সপ্তাহের আন্দোলনে হাসিনার পতন হয়েছে—এটা বলা সহজ, কিন্তু বাস্তবে গত সাড়ে পনেরো বছরের বিএনপির ত্যাগ ও প্রেক্ষাপটই এই সফলতা এনে দিয়েছে।” তিনি দাবি করেন, “২০২৩ সালের জুলাই মাসে ঢাকায় বিএনপির সাত লাখ লোকের সমাবেশ এবং পরদিন অবরোধের ডাক দিয়েই আন্দোলনের নতুন গতি তৈরি হয়েছিল। আমরা রাজপথে গদা হাতে দাঁড়িয়েছিলাম, পুলিশ আমাদের তাড়া করেছিল—আমরা পালটা প্রতিরোধ করেছি।”
ভারতের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “৫ আগস্ট ২০২৪ সালে আমরা ভারত থেকে দ্বিতীয়বারের মতো স্বাধীনতা অর্জন করেছি। অনেকেই এটিকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলেন—আমিও তাই বলি। কেউ এ নিয়ে তর্ক করতে এলে সে মূর্খ ছাড়া কিছু নয়।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাকালীন আহ্বায়ক জসিম উদ্দিন চৌধুরী জেরিস। যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন সোয়ালেহীন করিম চৌধুরী ও সফিকুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল কদ্দুস চৌধুরী শায়েস্তা, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, রাজনগর উপজেলা বিএনপির নবনির্বাচিত সভাপতি নুরুল ইসলাম শেলুন এবং যুক্তরাজ্য জাতীয়তাবাদী ফোরাম মৌলভীবাজার জেলার সভাপতি শাহ সাইফুল আখতার লিখন।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান চৌধুরী তপন, জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আলহাজ অদুদ আলম, যুক্তরাজ্য যুবদলের সাবেক সভাপতি নাসিম আহমেদ, কেন্ট বিএনপির সভাপতি রুহুল ইসলাম রুলু, মৌলভীবাজার সদর থানা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আখতার সেকুল এবং যুক্তরাজ্য জাতীয়তাবাদী ফোরামের প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন আহাদ।