নিজস্ব সংবাদদাতা :

সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল। স্বাভাবিক সংসার জীবন, পারিবারিক রুটিন, হাসিমুখের ছবি। কিন্তু হঠাৎ করেই বদলে যেতে থাকে চিত্র। একের পর এক গৃহবধূ নিখোঁজ হতে থাকেন উত্তর ২৪ পরগনার বারাসাত এলাকা থেকে। কেউ দুপুরে বাজার করতে গিয়ে আর ফেরেননি, কেউবা সন্তানকে ঘুম পাড়িয়ে নিঃশব্দে রাতের অন্ধকারে ঘর ছেড়েছেন।

প্রথমদিকে পরিবারগুলো ভেবেছিল, হয়তো রাগ করে আত্মীয়ের বাড়ি গেছেন। কিন্তু সময় যত গড়িয়েছে, বেরিয়ে এসেছে এক রকম শিউরে ওঠার মতো তথ্য—শুধু জানুয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে নিখোঁজ হয়েছেন ৫৩৬ জন বিবাহিত নারী

এই তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয় চাঞ্চল্য। চারদিকে গুঞ্জন—কারও মতে, দাম্পত্য কলহ; কেউ বলছেন, প্রেম করে পালিয়েছেন। কেউ আবার বলছেন, ‌‘এটা কি সত্যিই ভালোবাসা, নাকি কোনো ভয়ংকর ষড়যন্ত্র?

প্রেম, স্বাধীনতা, না কি একাকীত্বের চিৎকার?

পুলিশ তদন্তে নামে। দেখা যায়, অধিকাংশ নারী স্বেচ্ছায় ঘর ছেড়েছেন। অনেকেই প্রেমে জড়িয়ে পড়েছিলেন ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম কিংবা টিকটকের মাধ্যমে। কারও প্রেমিক বাইকচালক, কেউ স্বামীর বন্ধু। এমনও দেখা গেছে, ছোট ছোট সন্তান রেখেই গৃহবধূ পালিয়ে গিয়েছেন।
পুলিশ যাদের উদ্ধার করেছে, অনেকেই স্পষ্টভাবে বলেছেন, “আমরা প্রাপ্তবয়স্ক, নিজের জীবন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার আমাদের আছে।” বেশিরভাগই স্বামীর ঘরে ফিরতে রাজি নন।

সোশ্যাল মিডিয়া: ভালোবাসা না কি মানসিক আশ্রয়?
মানসিক স্বাস্থ্য বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি শুধুই প্রেমের বিষয় নয়। বরং এটি এক ধরনের একাকীত্ব, মানসিক চাপ, দাম্পত্য জীবনের ক্লান্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার আকুতি। সোশ্যাল মিডিয়া অনেকের কাছেই হয়ে উঠেছে ‘বেরিয়ে যাওয়ার রাস্তা’।

এই খবর প্রথম ছড়ায় একটি ফেসবুক পেজে। সেখান থেকে ভাইরাল হয় বিভিন্ন গ্রুপ, চ্যাট এবং সংবাদমাধ্যমে। প্রশাসনও নড়েচড়ে বসেছে।

লোকলজ্জা ও নিঃশব্দ কান্না:

বেশ কিছু স্বামী থানায় গিয়ে অভিযোগ করতেও ভয় পাচ্ছেন লোকলজ্জার ভয়ে। অনেকেই অনুরোধ করেছেন, যেন স্ত্রীর নাম প্রকাশ না করা হয়।
এই ঘটনা সমাজে এক নতুন প্রশ্ন তুলে দিয়েছে—

গৃহবধূরা কেন এমন করে চলে যাচ্ছেন? এটা কি শুধুই প্রেম? নাকি এক গভীর অভ্যন্তরীণ যন্ত্রণার চিৎকার?

Exit mobile version