Close Menu
banglavoicebanglavoice

    Subscribe to Updates

    Get the latest creative news from FooBar about art, design and business.

    What's Hot

    কিশোরগঞ্জের ৩ হাজারেরও বেশি গোরখোদক মনু মিয়া মারা গেছেন

    June 28, 2025

    লক্ষ্মীপুরে ব্যাক্তির বায়নাচুক্তি মালিকানা সম্পত্তি দখলের অভযোগ 

    June 27, 2025

    বগুড়ায় বন্ধুর বাড়িতে হিরো আলমের আত্মহত্যার চেষ্টা

    June 27, 2025
    footer
    Facebook X (Twitter) Instagram
    সর্বশেষ
    • কিশোরগঞ্জের ৩ হাজারেরও বেশি গোরখোদক মনু মিয়া মারা গেছেন
    • লক্ষ্মীপুরে ব্যাক্তির বায়নাচুক্তি মালিকানা সম্পত্তি দখলের অভযোগ 
    • বগুড়ায় বন্ধুর বাড়িতে হিরো আলমের আত্মহত্যার চেষ্টা
    • জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন খামেনি
    • ৮ আগস্ট নতুন বাংলাদেশ দিবস, ১৬ জুলাই শহীদ আবু সাঈদ দিবস
    • টাঙ্গাইল তেলভর্তি ট্রাক ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার ২, মালামাল ঊদ্ধার
    • ১০ বছরের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী নয়”—প্রস্তাবে সম্মতি বিএনপির
    • সাবেক সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল গ্রেফতার
    পরীক্ষামূলক সম্প্রচার....
    Facebook X (Twitter) Instagram YouTube
    banglavoicebanglavoice
    Saturday, June 28
    • প্রচ্ছদ
    • বাংলাদেশ
    • রাজনীতি
    • অর্থনীতি
    • আন্তর্জাতিক
    • সারা বাংলা
    • খেলাধুলা
    • বিনোদন
    • অপরাধ
    • আইন-আদালত
    • বিবিধ
    banglavoicebanglavoice
    Home » ইতিহাসে যে পাঁচটি নতুন পরীক্ষার ল্যাবরেটরি ছিল বিশ্বকাপ

    ইতিহাসে যে পাঁচটি নতুন পরীক্ষার ল্যাবরেটরি ছিল বিশ্বকাপ

    October 4, 2023
    Share
    Facebook Twitter LinkedIn Pinterest Email

    নিউজ ডেস্ক :

    ১৯৭৫ সালে ইংল্যান্ডে যখন প্রথম ক্রিকেট বিশ্বকাপের আসর বসে, তখন সেই টুর্নামেন্ট আয়োজনের প্রধান বা একমাত্র লক্ষ্য ছিল আইসিসি-র শূন্য কোষাগারে কিছু টাকাপয়সা আমদানি করা।

    আন্তর্জাতিক বিমা সংস্থা প্রুডেন্সিয়াল ওই টুর্নামেন্টে ১ লক্ষ পাউন্ড স্পনসরশিপের অঙ্গীকার করেছিল, সেই ভরসাতেই মাত্র আঠারোটা একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা হওয়ার পরই ওই ফরম্যাটের ‘বিশ্বকাপ’ আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে আইসিসি।

    ইংল্যান্ড তত দিনে ডজনখানেক ‘ওয়ানডে’ খেলে ফেললেও ভারত, পাকিস্তান বা ওয়েস্ট ইন্ডিজের মতো টিমগুলো কিন্তু সেই ফরম্যাটে দু’তিনটের বেশি ম্যাচ খেলেনি। অস্ট্রেলিয়া তো মানতেই চায়নি ওয়ানডে ক্রিকেটের আদৌ কোনও ভবিষ্যৎ আছে বলে!

    অথচ এর অনেক পরে টিটোয়েন্টি বা টেস্টের বিশ্বকাপ বা বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ চালু হলেও আজও কিন্তু ওয়ানডে বিশ্বকাপের বিজয়ী দলই ক্রিকেট দুনিয়ার অঘোষিত চ্যাম্পিয়নের স্বীকৃতি পেয়ে আসছে।

    আর বাস্তবতা এটাই, যে প্রথম বিশ্বকাপের পরবর্তী প্রায় অর্ধশতাব্দীতে সেই ওয়ানডে টুর্নামেন্টই কিন্তু ক্রিকেট বিশ্বে যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার সেরা মঞ্চ হয়ে উঠেছে- সেটা স্পিনারকে দিয়ে বোলিং আক্রমণের সূচনা করানোই হোক, কিংবা পিঞ্চ হিটারদের দিয়ে ওপেন করিয়ে শুরুতেই বিপক্ষকে ছিন্নভিন্ন করার চেষ্টা!

    এবং এরকম উদাহরণ দেওয়া যায় আরও অজস্র।

    তবে বিশ্বকাপে প্রয়োগ করা এই ‘এক্সপেরিমেন্ট’গুলোর কোনও কোনওটা ধোপে টিঁকেছে, কোনওটা আবার সময়ের দাবিতেই বাতিলের খাতায় চলে গেছে। পুরনো ফর্মুলা নাকচ করে এসেছে নতুন ফর্মুলাও।

    এই প্রতিবেদনে আমরা ফিরে তাকিয়েছি এমনই পাঁচটি নতুন এক্সপেরিমেন্টের দিকে – বিশ্বকাপ ক্রিকেটের মঞ্চেই যেগুলোর প্রথম ব্যাপক প্রয়োগ হয়েছিল।

    এর সবগুলোই যে মারাত্মক ‘সুপারহিট’ হয়েছিল তা অবশ্য বলা যাবে না- তবে এর প্রতিটা নিয়েই ক্রিকেট দুনিয়াতে হইচই হয়েছিল বিস্তর, এগুলোর পক্ষে-বিপক্ষে নানা যুক্তি দিয়ে তর্কে মেতে উঠেছিলেন বোদ্ধা আর ক্রিকেট-অনুরাগীরা !

    ১৯৯২ সালে পঞ্চম বিশ্বকাপেই প্রথমবারের মতো চালু হয়েছিল ক্রিকেটারদের রঙিন পোশাক, সাদা বল, কালো সাইটস্ক্রিন আর দিন-রাতের ম্যাচ।

    কিন্তু টুর্নামেন্টে তার চেয়েও বড় চমকটা দিয়েছিলেন অন্যতম স্বাগতিক দেশ নিউজিল্যান্ডের ক্যাপ্টেন মার্টিন ক্রো, তার দলের স্পিনার দীপক প্যাটেলকে দিয়ে এক প্রান্ত থেকে বোলিং আক্রমণের সূচনা করিয়ে।

    কেনিয়ায় জন্মানো দীপক প্যাটেল বহুদিন ইংল্যান্ডে খেললেও নির্বাচকদের নজরে পড়েননি, খানিকটা বাধ্য হয়েই কেরিয়ারের মাঝামাঝি তিনি নিউজিল্যান্ডে ‘ইমিগ্রেট’ করেন।

    নিউজিল্যান্ড জাতীয় দলেও অবশ্য জায়গা পেতে তাকে বেশ কষ্ট করতে হয়েছিল, সেখানে তার প্রতিযোগিতাটা ছিল জন ব্রেসওয়েলের সঙ্গে। কিন্তু ‘৯২র বিশ্বকাপ দীপক প্যাটেলের কেরিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।

    স্পিনারের হাতে পালিশ ওঠার আগেই নতুন বল তুলে দেওয়ার সেই পরিকল্পনা সেবার দারুণভাবে খেটে গিয়েছিল, আর মার্টিন ক্রো-র সেই গেমপ্ল্যান সার্থকভাবে বাস্তবায়ন করেছিলেন দীপক প্যাটেল।

    অস্ট্রেলিয়ার ডাকসাইটে ওপেনিং জুটি ডেভিড বুন আর জেফ মার্শ-ও শুরুর ওভারগুলোতেই দীপক প্যাটেলের অফব্রেক সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছিলেন, এমন কী বেশ ছোট মাঠেও তারা প্যাটেলকে তুলে মাঠের বাইরে ফেলতে পারেননি।

    গোটা টুর্নামেন্টেও মাত্র ৩.১০ ইকোনমি রেট নিয়ে সেরা বোলার হয়েছিলেন দীপক প্যাটেল, যদিও সেমিফাইনালে অপ্রত্যাশিতভাবে পাকিস্তানের কাছে হেরে নিউজিল্যান্ডকে ওই বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে হয়েছিল।

    তবে সাদা বলের ক্রিকেটে স্পিনারকে দিয়ে বোলিং ওপেন করানোর ধারা ক্রমেই বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে, এক সময়ে যা অকল্পনীয় ছিল সেটাই ক্রিকেট দুনিয়ায় আজ বেশ পরিচিত প্র্যাকটিস হয়ে উঠেছে।

    সুপরিচিত ক্রীড়া ভাষ্যকার আয়ুষ মঞ্জুনাথের কথায়, “ক্রিকেট দুনিয়া এখন এটার সঙ্গে বেশ অভ্যস্ত। এখন টিটোয়েন্টি ম্যাচেও আমরা হামেশাই স্পিনারকে দিয়ে অ্যাটাক ওপেন করাতে দেখি, আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে সুনীল নারিন যে কাজটা এক সময় নিয়মিত করতেন।”

    পালিশ না-ওঠা নতুন বলেও কীভাবে স্পিন করাতে হবে ও ব্যাটসম্যানকে আটকে রাখতে হবে – সেই আর্টটা আজ অনেক বোলারই রপ্ত করেছেন এবং তার কৃতিত্ব মার্টিন ক্রো-দীপক প্যাটেল জুটিকেই দিতে চান মি মঞ্জুনাথ।

    ২০১৯ সালে বিশ্বকাপ ক্রিকেটে তো টুর্নামেন্টের প্রথম বলটিই করেছিলেন একজন স্পিনার – তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার ইমরান তাহির !

    প্রথমদিকে বিশ্বকাপের ম্যাচগুলোতে প্রতিটা দল ষাট ওভার করে খেলার সুযোগ পেত, পরে সেটাই কমিয়ে করা হয় পঞ্চাশ ওভার।

    এর মধ্যে শেষ দিকের দশ-পনেরো ওভারকে বলা হত ‘স্লগ ওভার’, প্রথম দিকে একটু ধরে খেলে ও উইকেট হাতে রেখে শেষের ওভারগুলোতে ঝোড়ো গতিতে খেলে যতটা সম্ভব রান বাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করত প্রায় সব দলই।

    ১৯৭৫-র প্রথম বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচে ভারতের ক্রিকেট লেজেন্ড সুনীল গাভাসকার তো পুরো ষাট ওভার খেলেও ৩৬ রানে নট আউট ছিলেন – তার স্ট্রাইক রেট ছিল ২০র সামান্য বেশি!

    ওয়ানডে ক্রিকেটের ‘দর্শন’টা তখনও বেশিরভাগ দলই রপ্ত করতে পারেনি – ফলে ব্যাটিং ওপেন করতে এসে গাভাসকার পর্যন্ত খেলেছিলেন বিশুদ্ধ টেস্ট ক্রিকেটের ঘরানায়।

    এর দু’দশক বাদে ১৯৯৬তে যখন ভারতীয় উপমহাদেশে বিশ্বকাপ হচ্ছে, তখন কিন্তু ক্রিকেট দুনিয়া বিস্ফারিত চোখে দেখল শ্রীলঙ্কার দুই ওপেনার সনৎ জয়সুরিয়া আর রমেশ কালুউইথার্না কীভাবে ওয়ানডে ক্রিকেটের ব্যাকরণটাই বদলে দিচ্ছেন!

    তখন প্রথম ১৫ ওভারে মাঠে ফিল্ডার প্লেসমেন্টের বিধিনিষেধ চালু হয়ে গেছে, আর সেটারই পূর্ণ সুযোগ নিয়ে ওপেনিং জুটি জয়সুরিয়া আর কালুউইথার্না বিপক্ষের বোলিং আক্রমণকে একেবারে প্রথম ওভার থেকেই ছিঁড়ে ফেলতে লাগলেন।

    ক্রিকেটে ‘পিঞ্চ হিটার’ কথাটার আমদানি হয়েছিল বিশ্বকাপে তাদের সেই দুর্ধর্ষ পারফরমন্সের পর থেকেই!

    অথচ কেরিয়ারের শুরুর দিকে জয়সুরিয়া বা কালুউইথার্না দুজনেই ছিলেন মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান।

    পাওয়ার প্লে-র ওভারগুলোতে তাদের জোরে বল হিট করতে পারার ক্ষমতাকে কাজে লাগাতেই ব্যাটিং অর্ডারে তাদের প্রোমোশন দেয় শ্রীলঙ্কা – আর সেই কৌশল সেবার তাদের বিশ্বকাপ জিততেও দারুণ সাহায্য করেছিল।

    ওই টুর্নামেন্টের ঠিক সাত বছর বাদে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে প্রথম বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কা যখন সনৎ জয়সুরিয়ার নেতৃত্বে খেলছে, তার কাছে জানতে চেয়েছিলাম ওপেনিং-এই ঝড় তোলার ওই স্ট্র্যাটেজি থেকে তারা কেন সরে এসেছেন?

    জয়াসুরিয়ার সহজ জবাব ছিল, “ওরকম খেলতে গেলে সঙ্গে আপনার কালুর মতো পার্টনার চাই। কালু ছাড়া ওরকম আর কাউকে পাইনি যার সঙ্গে জুটি বেঁধে ওভাবে চালিয়ে খেলা সম্ভব!”

    তিনি সে দিন বিবিসি বাংলাকে আরও বলেছিলেন, “আর সে সময় আমাদের টপ আর মিডল অর্ডারে কে কে ছিল ভাবুন… অর্জুন রণতুঙ্গা, অরবিন্দ ডি সিলভা, অশাঙ্ক গুরুসিংহে এরা!”

    এরকম বাঘা বাঘা নাম ব্যাটিং লাইন আপে থাকলে ওপেনাররা ওরকম মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে খেলতেই পারেন, এটাই ছিল জয়সুরিয়ার যুক্তি।

    অনেক ক্রিকেট পন্ডিত অবশ্য মনে করিয়ে দেন, শ্রীলঙ্কারও আগে ১৯৯২ বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ড তাদের লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যান মার্ক গ্রেটব্যাচকে দিয়ে ওপেন করিয়ে কিংবা ইংল্যান্ড তাদের অলরাউন্ডার ইয়ান বোথামকে ব্যাটিং অর্ডারে তুলে এনে অনেকটা একই ধরনের পরীক্ষা করেছিল।

    শ্রীলঙ্কার পরে আরও বহু দলই অবশ্য তাদের সেরা ‘পিঞ্চ হিটার’কে ওপেনিংয়ে তুলে এনেছে, চেষ্টা করেছে পাওয়ার প্লে-র পুরো ফায়দা তোলার।

    ঠিক সেভাবেই ভারতের হয়ে একদিন ওপেন করা শুরু করেছেন বীরেন্দর সেহওয়াগ (এমন কী এক সময় তেন্ডুলকরও), কিংবা অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ম্যাথু হেইডেন ও অ্যাডাম গিলক্রিস্ট।

    ফুটবল বিশ্বকাপে যেমন ব্রাজিল, ক্রিকেট বিশ্বকাপে প্রায় সেই মর্যাদা অস্ট্রেলিয়ার। ব্রাজিল যেমন পাঁচটি ফিফা বিশ্বকাপ জিতেছে, তেমনি অস্ট্রেলিয়াও বারোটি বিশ্বকাপের মধ্যে বিজয়ীর সম্মান পেয়েছে পাঁচবার।

    ২০০৭ সালে ক্যারিবিয়ানে যখন তারা চতুর্থবার বিশ্বকাপ জিতছে, ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ম্যাচে একটা অদ্ভুত দৃশ্য দেখা গিয়েছিল।

    ফাইনালে মাত্র ৭২ বলে সেঞ্চুরি করে ম্যাচ-জেতানো একটি ইনিংস খেলেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান অ্যাডাম গিলক্রিস্ট।

    সেঞ্চুরি করে দর্শকদের অভিবাদন জানাতে তিনি যখন ব্যাট আকাশে তুলছেন, তখন টিভি ক্যামেরার ক্লোজ-আপে দেখা যায় তার হাতের ব্যাটিং গ্লাভসে একটা অংশ কেমন অদ্ভুতভাবে ‘লাম্প’ বা কুঁজের মতো ফুলে আছে!

    ম্যাচের পর গিলক্রিস্ট নিজেই জানান, ব্যাটের ‘গ্রিপ’ যাতে আরও ভালভাবে হয় সে জন্যই তিনি গ্লাভসের ভেতরে একটা স্কোয়াশ বল ঢুকিয়ে রেখেছিলেন!

    উইজডেনের ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ ক্যালাম ট্রেনামান জানাচ্ছেন, গ্লাভসে স্কোয়াশ বলটা দেওয়ার উদ্দেশ্য হল হাতের মধ্যে যাতে ব্যাটটা গড়িয়ে না-যায় এবং সেটাকে অনেক শক্তভাবে ধরা যায়।

    তার কথায়, “এটা করলে আসলে আপনাকে তা আরও বেশি স্ট্রেইট বা সোজাসুজি খেলতে সাহায্য করবে এবং ব্যাটের ‘ফুল ফেস’ বা পুরো সামনের অংশটা আপনি ব্যবহার করতে পারবেন। গিলক্রিস্টও ঠিক ওটাই করেছিলেন।”

    ফাইনালে পরাজিত শ্রীলঙ্কা দল অবশ্য সেই যুক্তি মানতে প্রস্তুত ছিল না।

    শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের তৎকালীন সচিব কাঙ্গাদারান মাথিভানান ফাইনালের পরই আইসিসি-কে চিঠি লিখে অভিযোগ জানান, অ্যাডাম গিলক্রিস্ট যা করেছেন সেটা পুরোপুরি ‘আনএথিকাল’ বা অনৈতিক।

    আইসিসি কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়ার আগেই বিশ্ব ক্রিকেটের আইনকানুনের যারা কাস্টডিয়ান বা রক্ষক, সেই এমসিসি কিন্তু রীতিমতো বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দেয়, গ্লাভসে স্কোয়াশ বল রেখে গিলক্রিস্ট ক্রিকেটের কোনও নিয়ম ভাঙেননি।

    “এটা ক্রিকেটের কোনও আইনের লঙ্ঘন তো নয়ই, এমন কী খেলার স্পিরিটেরও পরিপন্থী নয় বলেই আমরা মনে করি”, এমসিসি-র এই বক্তব্যের পরই সেই বিতর্কের অবসান ঘটে।

    এরপর থেকে ক্রিকেট দুনিয়ায় অনেক ব্যাটারই গ্লাভসের ভেতরে নিজেদের সুবিধামতো বিভিন্ন আকারের ‘ফরেন অবজেক্ট’ ঢুকিয়ে থাকেন, যদিও সঙ্গত কারণেই সেটা নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলার রেওয়াজ খুবই কম।

    সেই ইনিংস প্রসঙ্গে পরে এক সাক্ষাৎকারে কোহলি বলেছেন, “আমার শুধু ভয় ছিল প্রথম বলটা যেন মালিঙ্গা ইয়র্কার না-দেয়। ওটা ভাগ্যিস ইয়র্কার ছিল না, কিন্তু হলে যে কী করতাম সত্যিই আমার কাছে তার কোনও জবাব ছিল না!”

    ভালো ইয়র্কারকে যে দুনিয়ার সেরা ব্যাটাররাও কতটা সমীহ করে চলেন, কোহলির এই সরল স্বীকারোক্তিই তার প্রমাণ।

    অথচ বিশ্বকাপের ইতিহাসের প্রথম পর্বে ইয়র্কার বা স্লোয়ার কিন্তু ফাস্ট বোলারদের সেরা হাতিয়ার ছিল না।

    ইংল্যান্ডের মাটিতে প্রথম দুটো বিশ্বকাপ যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রায় অনায়াসে জিতেছিল, তার পেছনে খুব বড় ভূমিকা ছিল ক্যারিবিয়ান ‘পেস ব্যাটারি’র – যাতে ছিল অ্যান্ডি রবার্টস, মাইকেল হোল্ডিং বা জোয়েল গার্নারের মতো বিখ্যাত সব নাম।

    দিল্লিতে বিবিসির ক্রিকেট বিশ্লেষক আদেশ গুপ্তা বলছিলেন, “হোল্ডিং বা গার্নাররা কিন্তু জোরে শর্টপিচ বল বা বাউন্সের ওপরই বেশি ভরসা করতেন, তাদের আমরা কখনোই খুব একটা ইয়র্ক করতে দেখিনি।”

    “তা ছাড়া ইংল্যান্ড বা অস্ট্রেলিয়ার ফাস্ট পিচে ইয়র্কার তেমন কাজেও আসে না। ’৮৭ বা ’৯৬তে যখন উপমহাদেশে বিশ্বকাপ খেলা হল, তখন থেকেই কিন্তু এ অঞ্চলের স্লো পিচে ব্যাটারদের ইয়র্কার দেওয়ার চল শুরু হল”, জানাচ্ছেন তিনি।

    বুমরা-মালিঙ্গা-স্টার্ক ছাড়াও পাকিস্তানের ওয়াসিম আকরাম ও ওয়াকার ইউনুস, অস্ট্রেলিয়ার ব্রেট লি কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকার ডেল স্টেইনের মতো অনেকেই বহু বিশ্বকাপে নিখুঁত ইয়র্কারে ব্যাটারদের শিরদাঁড়ায় ঠান্ডা স্রোত বইয়ে দিয়েছেন।

    ক্রিকেট মাঠে সময়ে-অসময়ে খেলা ভেস্তে দেওয়ার জন্য যার সবচেয়ে দুর্নাম, তা হল বৃষ্টি।

    আর ক্রিকেট এমন একটা খেলা যা ইন্ডোর স্টেডিয়ামে সম্ভবই নয়, কাজেই বহু ম্যাচের নিষ্পত্তির জন্য এখানে প্রকৃতির খেয়ালখুশির ওপর ভরসা করা ছাড়া ক্রিকেট কর্তাদের কোনও উপায়ও থাকে না।

    বৃষ্টিবিঘ্নিত ওয়ানডে ম্যাচগুলোতে ওভার কাটছাঁট করার পরও কীভাবে জয়পরাজয়ের নিষ্পত্তি হবে, তা নিয়েও নানা সময়ে নানা ফর্মুলা নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা চালানো হয়েছে।

    তবে ওয়ানডে ক্রিকেটের প্রথম দিকে এজন্য যে নিয়ম চালু ছিল, ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা একমত যে সেটা পরে ব্যাট করা টিমের জন্য অনেক বেশি সুবিধাজনক ছিল!

    ১৯৯২ সালে বিশ্বকাপে এই সীমাবদ্ধতা দূর করতেই আইসিসি একটি নতুন ‘রেইন রুল’ চালু করে, যে নিয়মগুলো তৈরি করেছিল অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট গ্রেট রিচি বেনো-সহ আরও জনাকয়েক বিশেষজ্ঞকে নিয়ে তৈরি একটি প্যানেল।

    এই ‘রেইন রুলে’র মূল কথাটা ছিল, বৃষ্টির জন্য যদি পরে ব্যাট করা দল তাদের কোটার পুরো ওভার খেলতে না-পারে তাহলে তাদের নতুন টার্গেট স্থির করা হবে আগে ব্যাট করা দল যে ওভারগুলোতে সবচেয়ে কম রান করেছে, সেই অনুপাতে।

    কিন্তু এই নিয়মটাই সিডনিতে ইংল্যান্ড আর দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে সেমিফাইনালকে প্রহসনে পরিণত করে।

    ম্যাচের একটা পর্যায়ে দক্ষিণ আফ্রিকার জেতার জন্য দরকার ছিল ১৩ বলে ২২ রান। বৃষ্টির জন্য খেলা কিছুক্ষণ বন্ধ থাকার পর ‘রেইন রুল’ অনুযায়ী যখন প্রোটিয়াদের নতুন টার্গেট দেওয়া হল, দেখা গেল তাদের ওই ২২ রানই করতে হবে মাত্র ১ বলে!

    রেইন রুল নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষারও সেখানেই অবসান – এরও কয়েক বছর পর বিকল্প হিসেবে এল ‘ডাকওয়ার্থ লুইস মেথড’।

    ইংল্যান্ডের পরিসংখ্যানবিদ, ফ্র্যাঙ্ক ডাকওয়ার্থ ও টোনি লিউইস জটিল গাণিতিক ফর্মুলার ভিত্তিতে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচের নিষ্পত্তির যে সমাধান বাতলে ছিলেন, সেটাই কিন্তু আজকের আধুনিক ক্রিকেট মেনে নিয়েছে।

    ১৯৯৭ সালে চালু হলেও আইসিসি প্রথমবারের মতো ‘ডাকওয়ার্থ লুইস মেথড’ প্রয়োগ করেছিল ১৯৯৯র বিশ্বকাপেই।

    এর পর থেকেই ম্যাচের দিন বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকলেই টিমের ক্যাপ্টেনরা পকেটে ডাকওয়ার্থ লুইস ক্যালকুলেশনের কাগজ নিয়ে চলতে শুরু করলেন, প্রতি ওভারের শেষে বদলে যাওয়া টার্গেট ড্রেসিং রুম থেকে তাদের পাঠাতে শুরু করলেন টিম স্ট্যাটিসটিশিয়ানরা।

    ২০০৩ সালের বিশ্বকাপে ডারবানে এরকমই একটা ‘ভুল ক্যালকুলেশনে’র জেরে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ম্যাচে অসহায়ভাবে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিয়েছিল স্বাগতিক দেশ দক্ষিণ আফ্রিকা, যার পরে অধিনায়কত্ব হারান শন পোলক।

    বৃষ্টির আগে ম্যাচের শেষ বলটা হিসেব না-জেনে মিড উইকেটে ঠুকেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার মার্ক বাউচার, অথচ ওই বলে মাত্র একটা রান করতে পারলেই জিতে যেত তার দল।

    পকেটে সঠিক হিসেবের কাগজ নিয়ে তখন মিটিমিটি হাসছেন শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক সনৎ জয়সুরিয়া।

    ভুল গণনার জেরে হেরে গিয়ে শন পোলকের সেই শূন্য উদাস দৃষ্টি বিশ্বকাপের অন্যতম ট্র্যাজিক মুহুর্ত হিসেবে আজও ক্রিকেট অনুরাগীরা মনে রেখেছেন।

    ডারবানের কিংসমিড স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য অভিশপ্ত সেই রাতে হাজির ছিলাম আমিও, প্রোটিয়া ভক্তরা বহুক্ষণ যেন বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না চোখের সামনে তারা কী ঘটতে দেখলেন।

    সেই বিশ্বকাপে সাংবাদিকদের জন্য আইসিসি যে ‘টুর্নামেন্ট গাইড’ পুস্তিকাটি দিয়েছিল, তাতে ‘ডাকওয়ার্থ লুইস মেথড’ প্রসঙ্গে লেখা হয়েছিল, “ইট’স দ্য নিয়ার পারফেক্ট সলিউশন ইন দিস ইমপারফেক্ট ওয়ার্ল্ড!”

    অর্থাৎ তারা বলতে চেয়েছিল দুনিয়ায় সব সমস্যার নিখুঁত সমাধান হয়তো সম্ভব নয় – কিন্তু এটাই নিখুঁতের সবচেয়ে কাছাকাছি!

    ক্রিকেট খেলাটারও নিখুঁত ম্যানুয়াল বলে বোধহয় কিছু হয় না, যুগে যুগে বা নতুন প্রজন্মে খেলার ধরনধারন, নিয়মকানুন প্রতিনিয়ত পাল্টাতেই থাকে। চলতে থাকে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষাও।

    বিগত প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে বিশ্বের সেরা ক্রিকেট শক্তিগুলো বিশ্বকাপকেই সেই সব পরীক্ষার ল্যাবরেটরি বানিয়ে এসেছে – ভারতের মাটিতে আসন্ন বিশ্বকাপেও নিশ্চয় তার কোনও ব্যতিক্রম হবে না।

    বাং ভ/অ

    আরো খবর

    চট্টগ্রামে বিএনপির সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন তামিম

    May 10, 2025

    সাভারে শর্ট পিচ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা ও পুরস্কার বিতরণ

    May 4, 2025

    ধনবাড়ী কিংস আয়োজিত প্রীতি ফুটবল ম্যাচ এর ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত

    May 3, 2025
    সর্বশেষ

    কিশোরগঞ্জের ৩ হাজারেরও বেশি গোরখোদক মনু মিয়া মারা গেছেন

    June 28, 20252

    লক্ষ্মীপুরে ব্যাক্তির বায়নাচুক্তি মালিকানা সম্পত্তি দখলের অভযোগ 

    June 27, 20251

    বগুড়ায় বন্ধুর বাড়িতে হিরো আলমের আত্মহত্যার চেষ্টা

    June 27, 20253

    জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন খামেনি

    June 26, 20251
    555555555

    bangla voice (বাংলা ভয়েস) is one of the most popular and reliable Bangla News publishers. It is the fastest-growing Bangla news media that provides accurate and objective news within the shortest possible time. Bangla Voice intends to cover its reach throughout every district of the country, also global news of every segment such as politics, economics, sports, entertainment, education, information and technology, features, lifestyle, and columns.

    Facebook Youtube Twitter

    Copyright © banglavoice.net. All right reserved.​

    Developed by Kolpotoru IT

    About

    • Stories
    • Community
    • Blog
    • Careers
    • Brand Assets

    Contact

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.

    Go to mobile version