বাংলা ভয়েস ডেস্ক :
আন্দোলনের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ও এর রেশ ধরে দেশের প্রায় সব অঙ্গনেই পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ক্রীড়াঙ্গনেও উঠেছে সংস্কারের দাবি।
বিশেষ করে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিনসহ বাফুফের আরও দুজন কর্মকর্তার পদত্যাগের দাবিতে কয়েকদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে দেশীয় ফুটবলের সমর্থকদের একটি অংশ।
এরইমধ্যে সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ ছেড়েছেন সালাম মুশের্দী। অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে আগ থেকেই অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। এমনকি ফিফা তাঁকে প্রায় ১৩ লাখ টাকা জরিমানাও করেছিল।
সভাপতি সালাহউদ্দিন এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাননি। তবে নিজেদের দাবিতে অনড় আন্দোলনকারীরা। উদ্ভূত এ পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল রোববার বাফুফে সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার জানিয়েছেন, ফিফা সর্বদা বাফুফের ওপর নজর রাখছে। তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপে ফেডারেশনে পরিবর্তন এলে ফিফার নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে, এমন শঙ্কাও জানিয়েছেন বাফুফে সাধারণ সম্পাদক।
ইমরান হোসেন তুষার বলেছেন, ‘অনেকেই বলছেন, এখানে (বাফুফে) রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ হলে তবেই শুধু সাসপেন্ড হবে। আসলে কিন্তু তা না। রাজনৈতিক ব্যাপারটা একটা জায়গা। অন্য আরেকটা জায়গা হচ্ছে, বাফুফেকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে হবে। তৃতীয় পক্ষ এখানে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। এই ব্যাপারটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যা কেউ বলছে না। ফিফা সবসময় আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে, খোঁজ-খবর নেয়।
বাফুফে সাধারণ সম্পাদক যোগ করেন, ‘এরই মধ্যে ফিফা আমাদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগাযোগ করেছে। ফিফার আঞ্চলিক ম্যানেজাররা সব সময় খোঁজখবর রাখছেন। পত্রিকার মাধ্যমে তাঁরা এখানকার খবর পাচ্ছেন। আমাকে জিজ্ঞাসা করছেন, কোনো সমস্যা আছে কি না। আমি ইতিবাচকভাবেই তাঁদের বলেছি সবকিছু।
এর আগে ফেডারেশন কমিটিতে সরকারি হস্তক্ষেপের কারণে ২০০২ সালে আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফিফার নিষেধাজ্ঞা পেয়েছিল বাংলাদেশ ফুটবল দল। নির্বাচিত কমিটি ভেঙে সে সময় সরকার এডহক কমিটি করেছিল। যার কারণে শাস্তি পেয়েছিল জাতীয় দল। পরবর্তীতে এক মাসের মধ্যে নির্বাচিত কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়া হলে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় ফিফা।
সে বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়ে আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে ইমরান বলেছেন, ‘কোনো কারণে বাফুফে নিষিদ্ধ হলে খেলোয়াড়দের ক্ষতি হবে। তাই সমর্থকদের বলেছি, ফুটবলে যেন কোনো ক্ষতি না হয়। ফুটবলকে তারা (সমর্থকেরা) ভালোবাসে বলেই এখানে এসেছে। তবে কোনোরকম হস্তক্ষেপ যেন না আসে। বাফুফেকে নিজস্ব গতিতে চলতে দিতে হবে। আগামী ২৬ অক্টোবর আমাদের নির্বাচন। সেখানে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সব সুযোগ সামনে রয়েছে। কারও কোনো দাবি থাকলে তারা আসুক, নির্বাচন করুক, গণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করুক।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জাতীয় নারী দলের ফুটবলারদের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। কারণ সাবিনা-মারিয়ারা বাফুফে ভবনেই থাকেন। এ বিষয়টি মাথায় রেখে ১০ দিনের জন্য তাঁদের ছুটি দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন বাফুফের সাধারণ সম্পাদক।
ইমরান বলেছেন, ‘মূলত মেয়েরাই ব্রেক (বিরতি) চাইছিল। এতগুলো ম্যাচ খেলার কারণে তারা বিরতি চেয়েছিল, তাছাড়া আমাদের সামনের টুর্নামেন্টের যেহেতু দেরি আছে, আমরা তাদের ছুটি দিতে চেয়েছিলাম। আগামীকাল (আজ) সমর্থকদের কর্মসূচির কথা শুনে নিরাপত্তার স্বার্থে ওদের আমরা গতকাল থেকেই ছুটি নিতে বলেছিলাম।