বাংলা ভয়েস ডেস্ক :
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমানকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। গত বছরের জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারীদের প্ল্যাটফর্ম জুলাই রেভল্যুশনারি অ্যালায়েন্সের (জেআরএ) পক্ষ থেকে এমন ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
রোববার (৬ জুলাই) সংগঠনটির ফেসবুক পেজে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। পোস্টে এ সংক্রান্ত একটি ফটোকার্ডও শেয়ার করা হয়েছে। ফটোকার্ডে লেখা রয়েছে, ‘ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে বিএনপি নেতা ফজলুর রহমানকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হলো।’ পোস্টে ফজলুর রহমানের একটি উক্তি ‘‘চক্রান্তের কাছে জনগণ হেরে গেছে’’ জুড়ে দেওয়া হয়েছে।
পোস্টের ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ‘বিগত স্বৈরাচারের আমলে বিএনপি ছিলো সবচেয়ে বেশি অত্যাচারিত এবং নিপীড়িত। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে তাদের দীর্ঘদিনের সংগ্রামের ইতিহাস রয়েছে।
সেই বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের মুখে জুলাই-বিরোধী কথা একেবারেই বেমানান। এমন বক্তব্য জুলাইকে বিএনপির মুখোমুখি দাঁড় করায়। আমরা চাই- অতিদ্রুত বিএনপি দল থেকে ফজলুর রহমানের মতো নেতাদের বহিষ্কার করবে।
এ বিষয়টি নিয়ে আমার দেশ অনলাইনের পক্ষ থেকে জুলাই রেভল্যুশনারি অ্যালায়েন্সের আহ্বায়ক সালেহ আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি পোস্টের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘৫ আগস্টের পর থেকে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ফজলুর রহমান বিপ্লব ও বিপ্লবীদের নিয়ে নানা নেতিবাচক কথা-বার্তা বলে আসছেন, সেটা আপনারাও (সাংবাদিক) জানেন। এর মাধ্যমে তিনি জুলাই বিপ্লব ও বিপ্লবে অংশ নেওয়া ছাত্র-জনতাকে হেয়প্রতিপন্ন করছেন। তিনি বিএনপিতে আছেন বলেই এমন অসংলগ্ন কথা-বার্তা বলতে পারছেন, তাছাড়া জনগণই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতো।
সালেহ আহমেদ আরো বলেন, ‘আমরা অনেক দিন থেকেই বিষয়টি খেয়াল করে আসছি। তবে উনি প্রতিনিয়ত ছাত্র-জনতাকে অপমান করে যাচ্ছেন। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েই তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার পোস্ট দিয়েছি। তবে শুধু আমরা একা না, বরং বিষয়টি নিয়ে আমাদের পরিচিত ছাত্রদল, ছাত্রশিবির ও জুলাইয়ের অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গেও কথা বলেছি; তারাও এই সিদ্ধান্তে সম্মতি জানিয়েছেন।
ফজলুর রহমানকে অবাঞ্ছিত করা বলতে আপনারা কী বোঝাচ্ছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে সালেহ আহমেদ বলেন, ‘এখন থেকে উনি আগের মতো মানুষের সম্মান পাবেন না। বাংলাদেশের যেকোনো প্রান্তে উনাকে পেলে ছাত্র-জনতা তাকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করবে।
প্রসঙ্গত, বিএনপি নেতা ফজলুর রহমান ছাত্রজীবনে এক সময় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ছিলেন ও সভাপতি ছিলেন। ১৯৭৫ সালে শেখ মুজিব হত্যার পর তিনি ছাত্রলীগের এক বিদ্রোহী শাখা তৈরি করে নেতৃত্ব দেন এবং সারা দেশে শিক্ষার্থীদের সংগঠিত করার চেষ্টা করেন।
পরবর্তীতে কৃষক-শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সর্বশেষ বিএনপিতে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হিসেবে রয়েছেন। তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট স্বৈরাচারের পতনের পর থেকে নানা সময় তিনি বিতর্কিত বক্তব্য দিয়েছেন, যা দেশব্যাপী সমালোচনা ও ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।