ইয়াহিয়া খান বেলকুচি চৌহালী সংবাদদাতা :
সিরাজগঞ্জে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর এনায়েতপুর থানা শাখার উদ্যোগে এনায়েতপুর ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত ও আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করে দোয়া ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (৩সেপ্টেম্বর) বিকাল সাড়ে ৩ টায় ডঃ মোঃ সেলিম রেজার সভাপতিত্বে পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে এ দোয়া ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল উত্তরবঙ্গের কৃতি সন্তান জননেতা মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও জেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ মাওলানা শাহিনুর আলম এবং জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যক্ষ আলী আলম।
মাওলানা রফিকুল ইসলাম খাঁন বলেছেন, স্বাধীন বাংলাদেশে নিষ্ঠুর স্বৈরাচার আ’লীগ সরকার বার-বার দেশের স্বাধীনতা-স্বার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করেছে। এই আ’লীগ ৭১’ এর পর স্বাধীন বাংলাদেশে বাকশাল কায়েমের মাধ্যমে গণতন্ত্র হত্যা করে একদলীয় শাসন ও শোষণের নীতি অবলম্বন করেছিল।
আর খুনী, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা গোটা দেশকে স্বৈরাচারী কায়দায় দেশের মানুষ এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে জিম্মী ও অবরুদ্ধ করে রেখেছিল। পনের বছর আ’লীগের নিষ্ঠুর ও ফ্যাসিবাদী চরিত্রের অপশাসন ও শোষণের আমলে খুন, গুম, মামলা-হামলা আর স্বাধীন, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংসের মহোৎসবে নির্মমভাবে মেতেছিলো। দেশে ন্যয়বিচার বলতে কিছুই ছিল না। বিচার ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণরুপে ধ্বংস করে দিয়েছিল। এমতোবস্থায় ছাত্র-জনতার রক্তে অর্জিত গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে অর্জিত ২য় স্ব। ঐতিহ্ সভায় সভাপতিত্ব করেন এনায়েতপুর থানা আমীর ডা. মাও, মোঃ সেলিম রেজা। আলোচনা সভাটি হাজার হাজার ছাত্র-জনতার উপস্থিতিতে এক বিশাল সমাবেশে রূপ নেয়। এনায়েতপুর থানা সেক্রেটারী ডা.মোফাজ্জল হোসাইনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, কেন্দ্রীয় মজলিশে শু’রা সদসা, সিরাজগঞ্জ জেলা আমীর অধ্যক্ষ মাও. শাহীনূর আলম। সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় মজলিশে শু’রা সদস্য, জেলা নায়েবে আমীর মো. আলী আলম, জেলা নায়েবে আমীর মাও, আব্দুস সালাম, জেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক জাহিদুল ইসলাম, বেলকুচি উপজেলা আমীর আরিফুল ইসলাম সোহেল, উল্লাপাড়া উপজেলা আমীর মাও, শাহজাহান আলী, শাহজাদপুর উপজেলা আমীর মাও, মিজানুর রহমান, চৌহালী উপজেলা আমীর আবু সালেহ মোহাম্মদ আবু সাইদ, জামায়াত নেতা অধ্যাপক আব্দুল মজিদ, বেলকুচি উপজেলা নায়েবে আমীর অধ্যাপক নূর-উন-নবী সরকার, এনায়েতপুর থানা নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ মাও, আব্দুল গফুর, জামায়াত নেতা আল-আমীন খন্দকার, জুবায়ের হোসেন, হাজী রফিকুল্লাহ খন্দকার, শ্রমিক নেতা ডা. আইয়ূব আলী ও থানা শিবির সভাপতি ছাত্রনেতা ফয়সাল খন্দকার প্রমুখ। প্রধান অতিথি মাও. রফিকুল ইসলাম খাঁন তাঁর বক্তৃতায় আরো বলেন, একটি সুখী-সমৃদ্ধ, বাসযোগ্য সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে আমাদের সবাইকে ঐক্যবন্ধভাবে কাজ করতে হবে।
তিনি, ইনসাফ ভিত্তিক, একটি বৈষম্যহীন ও শোষণমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সকল দেশ প্রেমিক নাগরিকদেরকে জামায়াতের হাতকে শক্তিশালী করার উদাত্ত আহবান জানান। বিশেষ অতিথি জেলা আমীর অধ্যক্ষ মাও. শাহীনুর আলম দেশের স্বাধীনতা ও স্বার্বভৌমত্ব অটুট রাখতে গণতান্ত্রিক ও দেশ প্রেমিক সকল ছাত্র-জনতাকে সব সময় সতর্ক থাকার এবং দেশ বিরোধী সকল ষড়যন্ত্র রুখে দেয়ার আহবান জানান। সমাবেশে, এনায়েতপুর থানাকে উপজেলা ঘোষণা, যমুনা নদীর ভাঙ্গণ রোধ ও ব্রাহ্মণগ্রাম থেকে পাঁচিল পর্যন্ত টেকসই বাঁধ নির্মাণ, পূর্বের ন্যায় চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলার পূর্বাঞ্চল নিয়ে সিরাজগঞ্জ-৬ সংসদীয় আসন পূর্নবহাল, শহীদ পরিবারের সদস্যদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং আন্দোলনে আহত ও পঙ্গুত্ব বরণকারীদের যথাযথ পুর্নবাসন করার ৫টি প্রস্তুবনা পেশ ও সর্বসম্মতিক্রমে গৃহিত হয়।
প্রধান অতিথি মাও, রফিকুল ইসলাম খাঁন সকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে এনায়েতপুরে নিহত ৩ বীর; শহীদ শিহাব, শহীদ সিয়াম ও শহীদ ইয়াহিয়া’র পরিবারে যান এবং পৃথক পৃথকভাবে শহীদ পরিবারের সাথে মতবিনিময় সভায় মিলিত হন। তিনি, শহীদ পরিবারের সদস্যদের সার্বিক খোঁজ-খবর নেন এবং জামায়াতের পক্ষ হতে পরিবারের হাতে আর্থিক অনুদানের অর্থ তুলে দেন। এ সময় এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হলে তিনি সকল শহীদ পরিবারকে ধৈর্য্য ধরার আহবান জানান এবং শহীদদের এই আত্মত্যাগের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে শহীদদের শাহাদাৎ কবুলিয়াতের জন্য মহান আল্লাহর দরবারে বিশেষ দোয়া পরিচালনা করেন।