আজ ১৮ ডিসেম্বর, বিশ্ব আরবি ভাষা দিবস। বিশ্বের প্রায় ৪৫ কোটিরও বেশি মানুষের মাতৃভাষা এবং ইসলামের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল-কুরআনের ভাষা হিসেবে আরবি ভাষার ঐতিহ্য ও গুরুত্বকে সম্মান জানাতে প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে দিনটি পালিত হয়।
১৯৭৩ সালের এই দিনে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ২৭তম অধিবেশনে আরবি ভাষাকে জাতিসংঘের ষষ্ঠ দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তকে স্মরণীয় করে রাখতে ২০১২ সাল থেকে ইউনেস্কো ১৮ ডিসেম্বরকে বিশ্ব আরবি ভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।
২০২৫ সালের বিশ্ব আরবি ভাষা দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে— আরবির সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য ও বিশ্বজুড়ে জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিকাশে এর ঐতিহাসিক অবদান। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, মধ্যযুগে যখন ইউরোপ জ্ঞানচর্চায় পিছিয়ে ছিল, তখন আরবি ভাষার মাধ্যমেই গ্রিক ও রোমান দর্শন, চিকিৎসাবিদ্যা ও গণিত সংরক্ষিত ও বিকশিত হয়, যা পরবর্তীতে ইউরোপীয় রেনেসাঁর ভিত্তি গড়ে তোলে।
সমসাময়িক বাস্তবতায়, আরবি ভাষা আজ শুধু একটি যোগাযোগের মাধ্যম নয়— বরং আত্মপরিচয় ও প্রতিরোধের প্রতীক। বিশেষ করে তুরস্কের আঙ্কারায় অবস্থানরত ফিলিস্তিনি শরণার্থী এবং নিহত শিশু হিন্দ রাজাবের স্বজনদের কাছে এই দিবসটি ভিন্ন এক আবেগ ও তাৎপর্য বহন করছে। আরব বিশ্বের চলমান সংকটের প্রেক্ষাপটে ভাষাটি হয়ে উঠেছে সংগ্রাম ও ঐক্যের কণ্ঠস্বর।
এ উপলক্ষে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদসহ বিভিন্ন আয়োজনে আরবি ভাষার সমৃদ্ধ ইতিহাসের পাশাপাশি গাজার মানুষের সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের কথাও গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হয়।
বিশ্ব আরবি ভাষা দিবস উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, আরবি ভাষা হলো সংস্কৃতি, বিজ্ঞান ও সৃজনশীলতার এক অনন্য সেতু। বিভিন্ন জাতি ও সভ্যতার মধ্যে শান্তি, সংহতি ও পারস্পরিক বোঝাপড়া গড়ে তুলতে এই ভাষার ভূমিকা অপরিসীম।


















