দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ থাইল্যান্ডে এক সপ্তাহ ধরে চলা অবিরাম বৃষ্টিপাতে সৃষ্টি হওয়া আকস্মিক বন্যায় (ফ্ল্যাশ ফ্লাড) দেশটির দক্ষিণাঞ্চল ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ভোগ করছে।
সরকারি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৮ জনের মৃত্যু ঘটেছে আর প্রায় ২০ লাখেরও বেশি মানুষ বন্যার প্রভাব থেকে মুক্তি পায়নি। আক্রান্তদের মধ্য থেকে মাত্র ১৩ হাজারেরও কম মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরানো সম্ভব হয়েছে এবং বহু মানুষ এখনো যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থেকে উদ্ধার-প্রতীক্ষায় আছে।
সামাজিক ও স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিগুলোতে দেখা গেছে নগরায়নকৃত মোহরা-কেন্দ্রগুলো জলের স্তরে নিমজ্জিত; যানবাহন, বাড়িঘর পানিতে ভেসে আছে এবং বাসিন্দারা অনেকেই ছাদে উঠে উদ্ধার দলের জন্য অপেক্ষা করছেন। বিশেষত হাত ইয়াই শহরে এক দিনে রেকর্ড ৩৩৫ মিমি বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে—স্থানীয়দের মতে ৩০০ বছরের মধ্যে এটাই সর্বোচ্চ একদিনের বৃষ্টি। এখানেই দ্রুত বন্যা-তীব্রতার প্রধান কারণ নিহিত আছে।
সরকার দ্রুত সঙ্কট মোকাবেলায় সামরিক বাহিনীর সম্পৃক্ততা বাড়িয়েছে। থাই সেনাবাহিনী জানিয়েছে তারা একটি বিমানবাহী রণতরী ও ১৪টি নৌকা মিলিয়ে একটি বিশেষ ফ্লোটিলা পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং প্রয়োজনে ওই রণতরীকে ভাসমান হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহার করার সুযোগ রাখছে। এ ছাড়া উদ্ধার ও ত্রাণ-বিতরণে হেলিকপ্টার, নৌকা ও জাহাজ মোতায়েন করা হয়েছে। সামরিক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে তারা মাঠ পর্যায়ে প্রতিদিন প্রায় ৩ হাজার জনকে খাবার সরবরাহ করতে সক্ষম এমন রান্নাঘর পাঠাবে।
সরকারের মন্ত্রীসভা ইতোমধ্যেই সোংখলা প্রদেশকে দুর্যোগপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করেছে এবং বরাদ্দ করা হয়েছে জরুরি তহবিল; প্রদেশ গভর্নরের বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে লোকজন সরিয়ে নেওয়ার জন্য নৌকা, হাই-ক্লিয়রেন্স ট্রাক ও জেট-স্কি মোতায়েন করা হচ্ছে। থাইল্যান্ডের পাশাপাশি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আরও কয়েকটি দেশে ভূ–গত ও মেঘবর্ষণজনিত বন্যা পরিস্থিতি তীব্র।
ভিয়েতনামে এক সপ্তাহে বন্যা সংক্রান্ত মৃত্যু ৯১-এ পৌঁছেছে, আর মালয়েশিয়ায় এখন পর্যন্ত প্রায় ১৯ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হয়েছে; মালয়েশিয়ার উত্তর সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে ১২৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ঘটনার বিস্তারিত ও পরবর্তীকালে উদ্ধারপ্রচেষ্টার অগ্রগতির জন্য বিবিসিসহ স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোকে অনুসরণ করা যাচ্ছে।
তথ্যসূত্র: বিবিসি


















