ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক হওয়ার পর মুক্তি পাওয়া ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’র অধিকারকর্মীরা জানিয়েছেন, আটক অবস্থায় তাঁদের ওপর চালানো হয়েছে নির্মম নির্যাতন। কেউ কেউ জানিয়েছেন, তিন দিন না খেয়ে থাকতে হয়েছে, এমনকি শৌচাগারের পানি খেয়ে বেঁচে ছিলেন তাঁরা।
গাজার অবরোধ ভেঙে ত্রাণ নিয়ে যাওয়ার সময় গত বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকে ৪৭৯ জন অধিকারকর্মীকে আটক করে ইসরায়েল। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন জলবায়ু আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ, নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি মান্ডলা ম্যান্ডেলা ও কয়েকজন ইউরোপীয় আইনপ্রণেতা।
নির্মম নির্যাতনের অভিযোগ: মুক্তি পাওয়া অধিকারকর্মীরা জানান, আটক অবস্থায় ইসরায়েলি বাহিনী তাঁদের মারধর করেছে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা হাঁটু গেড়ে থাকতে বাধ্য করেছে। ওষুধ দেওয়া হয়নি, খাবারও দেওয়া হয়নি।
ইতালির সাংবাদিক সাভেরিও তোমাসি বলেন, “আমাদের সঙ্গে বানরের মতো আচরণ করা হয়েছে।”
মালয়েশিয়ার অভিনেত্রী হেলিজা হেলমি বলেন, “তিন দিন কিছু খাইনি—শুধু শৌচাগারের পানি খেয়েছি।”
ইতালির সাংবাদিক লরেনজো ডি’আগোস্তিনো জানান, তাঁর জিনিসপত্র ও অর্থ চুরি করেছে সেনারা। বন্দীদের দিকে বন্দুকের লেজার লাইট তাক করে ভয় দেখানো হয়েছে।
সরকারগুলো দায়িত্ব পালন করছে না : মুক্তির পর গ্রিসের এথেন্সে পৌঁছে গ্রেটা থুনবার্গ বলেন, “ইসরায়েল গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে, কিন্তু সরকারগুলো তাদের ন্যূনতম দায়িত্বও পালন করছে না। তারা যদি করত, এই নৌবহরেরই প্রয়োজন হতো না।”
ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া : ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তবে দেশটির চরম ডানপন্থী জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গাভির অধিকারকর্মীদের সঙ্গে ‘যথোচিত’ আচরণ করা হয়েছে বলে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া : এ ঘটনায় বিশ্বজুড়ে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ হয়েছে। বিভিন্ন দেশ ইসরায়েলের নির্মম আচরণের নিন্দা জানিয়েছে। গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়,“এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। দখলকৃত ফিলিস্তিনে যেমন অবমাননা ও নির্যাতন চলে, আমাদের সঙ্গেও তেমন আচরণ করা হয়েছে।”