মোঃ সোহাগ হোসেন, বেনাপোল সংবাদদাতা :
দীর্ঘ ৪ মাস ২২ দিন পর সৌদি প্রবাসী রুবেল হোসেনের লাশ ফিরে এলো দেশে। গত (৩ জুলাই) সৌদি আরবে বাংলাদেশ সময় বেলা ১২ টার সময় তার মৃত্যু হয়। নিহত রুবেল হোসেন যশোরের শার্শা উপজেলার ৭ নম্বর কায়বা ইউনিয়নের বাগুড়ী গ্রামের মোঃ ফারুক হোসেনের ছেলে।
নিহত রুবেল হোসেন, মাত্র এক বছর আগে পরিবারের সামান্য সুখের আশায় সৌদি আরবে যায়, সেখানে গিয়ে একটি মাদ্রাসায় পরিচ্ছন্ন কর্মী হিসেবে কাজ করত সে। কিন্তু গত কুরবানী ঈদের কারনে ওই মাদ্রাসাটি দু’মাস ছুটি হয়ে যায়। যার কারণে মাদ্রাসায় কাজ না থাকায় রুবেল তার পরিচিত এক ব্যক্তির সাথে অন্য জায়গায় সেফটি ট্যাংক পরিষ্কার করার কাজে যাই। ওই সেফটি ট্যাংকে মধ্যে পড়ে রুবেল প্রথমে অচেতন হয়ে পড়ে। পরে তার সহকর্মীরা সৌদি আরবের জেদ্দায় একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার কর্মরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে।
এর আগে রুবেল হোসেনের লাশ প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে গত (২৬ জুলাই) বুধবার দুপুর ২ টার সময় তার নিজ গ্রামে এলে লাশ দেখার পরে তৈরি হয় নানা ধূম্রজাল। লাশ দেখে রুবেলের মা, বাবা স্ত্রী, ও পরিবারের কেউ চিনে উঠতে পারিনি যে এটা তাদের সন্তানের লাশ। পরে অনেকটা ইচ্ছার বাহিরে ওই দিন রাতেই লাশটি শার্শার বাগআঁচড়ার সাধারণ গোরস্থানে দাফন করা হয়। দাফনের একদিন পরে জানা যায় যে লাশটি রুবেল হোসেনের লাশ মণে করে দাফন করা হছেছে সেটি কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর উপজেলার জবডল গ্রামের সৌদি প্রবাসী মোজাম্মেল হক (৪৫) এর লাশ। পরে মোজাম্মেল হকের সজনেরা স্থানীয় প্রতিনিধির সহযোগিতায় কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে কিশোরগঞ্জে নিয়ে গিয়ে পারিবারিক কবরস্থানের দাফন করে। মোজাম্মেল হকও দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবে একটি কোম্পানিতে চাকরি করত। রুবেলের মৃত্যুর পর এক সপ্তাহ পরে মোজাম্মেল হকও স্টকজনিত কারণে মৃত্যু হয়। দু’জনের লাশ একই হিমঘরে রাখার কারণে রুবেলের লাশ বাংলাদেশে পাঠানোর সময় কর্তৃপক্ষের ভুলে ওইখান থেকে লাশ বদলি হয়ে যায়।
অবশেষে (২৫ নভেম্বর) শনিবার দুপুরে দীর্ঘ ৪ মাস ২২ দিন পর দেশে আসলো একজন রেমিটেস যোদ্ধা (সৌদি প্রবাসী) রুবেলের লাশ, শনিবার (২৫ নভেম্বর) বিকেল ৫ টার সময় যানাজা নামাজের পর বাগআঁচড়া সাধারণ কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
নিহত সৌদি প্রবাসী রুবেল হোসেনের মা ময়না খাতুন জানান, রুবেল আমার সংসারে উপার্জন করার একমাত্র সম্বল ছিল। আমি মানুষের বাসায় কাজ করে ও ধার দিনা করে সামান্য সুখের আশায় বিদেশে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু আমার বাবা আর আমার বুকে জীবিত ফিরে এলোনা। মৃত্যুর প্রায় পাঁচ মাস পরে ছেলের লাশটি মাটি দিতে পেরে কিছুটা সন্তুষ্ট।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আলতাফ হোসেন সৌদি প্রবাসী রুবেলের লাশ দেশে ফিরা ও দাফনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।