নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় চর দখলকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষে অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার জাগলার চর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। হাতিয়া কোস্টগার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আবুল কাশেম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, জাগলার চরের জমি এখনো সরকারিভাবে কাউকে বন্দোবস্ত দেওয়া হয়নি। এই সুযোগে গত ৫ আগস্টের পর জাহাজমারা ইউনিয়নের কোপা সামছু বাহিনী চরের বেশ কিছু জমি বিক্রি করে।
পরে সুখচর ইউনিয়নের আলাউদ্দিন বাহিনী ওই জমির দখল নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে এবং আরও বেশি দামে জমি বিক্রি শুরু করে। এতে দুই পক্ষ আলাদাভাবে চর দখল ও জমি বিক্রির চেষ্টা চালাতে থাকে।
অভিযোগ রয়েছে, চর দখলের সঙ্গে যুক্ত ডাকাত আলাউদ্দিন সুখচর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি বেলায়েত হোসেন সেলিম, আওয়ামী লীগ নেতা নিজাম মেম্বার এবং বিএনপি নেতা নবীর ঘনিষ্ঠ। তারা কোপা সামছু বাহিনীকে চর থেকে বিতাড়িত করে জমি দখলের লক্ষ্যে আলাউদ্দিন বাহিনীর সঙ্গে আঁতাত করে। এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দুই গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলছিল।
মঙ্গলবার সকাল প্রায় ১০টার দিকে জাগলার চরের জমি দখলকে কেন্দ্র করে কোপা সামছু ও আলাউদ্দিন গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে বন্দুকযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। এতে অপর পক্ষের গুলিতে আলাউদ্দিনসহ চারজন গুরুতর আহত হন। পরে তাদের উদ্ধার করে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আলাউদ্দিনকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ছাড়া চারজনের মরদেহ ঘটনাস্থলেই পড়ে ছিল। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে জানতে সুখচর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি বেলায়েত হোসেন সেলিমের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল আলম বলেন, “একটি মরদেহ নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে রয়েছে এবং চারটি মরদেহ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। চরাঞ্চল দুর্গম হওয়ায় বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। ময়নাতদন্ত শেষে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।”


















