সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে আব্দুল লতিফ শেখ ওরফে খতিব হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ ঘটনায় সোমবার (১৭ নভেম্বর) চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নিহত খতিব (৪০) উপজেলার চর ফরিদপুর গ্রামের মো. আমিনুল ইসলামের ছেলে।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) গ্রেপ্তারকৃত চার আসামি সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। গ্রেপ্তাররা হলেন—চর ফরিদপুর গ্রামের মো. মাসুদ রানা (৩৮), মো. ফরিদুল ইসলাম (৪২), প্রবাসী মতিউর রহমান মতির স্ত্রী মোছা. শাহীনুর খাতুন (৪০) এবং খতিবের ভগ্নিপতি মো. রফিকুল ইসলাম (৪০)।
গোয়েন্দা পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নাজমুল হক রতন জানান, গত ৯ নভেম্বর সন্ধ্যায় খতিব নিখোঁজ হন। তিনদিন পর ১২ নভেম্বর সকালে ফুলজোড় নদী থেকে হাত-পায়ে ইট বাঁধা অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের বাবা আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন। সোমবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ফরিদুল, মাসুদ, শাহীনুর ও রফিকুলকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। পরে আদালতে তারা হত্যার দায় স্বীকার করেন।
জবানবন্দীতে আসামিরা জানান, খতিবের সঙ্গে শাহীনুরের দুই বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এ সময় খতিব তার কাছ থেকে ২ লাখ টাকা ধার নেন, কিন্তু পরে টাকা ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানান। এতে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। এই পরিস্থিতিতে খতিবের ভগ্নিপতি রফিকুলের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন শাহীনুর। নিজেদের সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে তারা খতিবকে হত্যার পরিকল্পনা করেন এবং মাসুদ ও ফরিদুলসহ আরও কয়েকজনকে দুই লাখ টাকায় ভাড়া করেন।
ঘটনার দিন শাহীনুর নিজেরাই ফাঁদ তৈরি করেন। তিনি খতিবকে নদীর ঘাটে ডেকে নেন, যেখানে আগে থেকেই অপর আসামিরা অপেক্ষা করছিল। শাহীনুর খতিবকে ঘুমের ওষুধ মেশানো কোমল পানীয় পান করালে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। এরপর আসামিরা তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে হাত-পায়ে ইট বেঁধে ফুলজোড় নদীতে ফেলে দেন। গ্রেপ্তারকৃতদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মামলার তদন্ত আরও এগিয়ে চলছে বলে জানিয়েছে ডিবি পুলিশ।


















