টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার নিউ ধলেশ্বরী নদীতে বালুবাহী ভারী বাল্কহেড চলাচলের কারণে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে অন্তত ১০টি গ্রামের শতাধিক পরিবার ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে।
ভুক্তভোগীদের দাবি— দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় এই অবৈধ কর্মকাণ্ড চলছে, অথচ তাদের আর্তনাদ পৌঁছায়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিদিন সিরাজগঞ্জ থেকে শতাধিক বালুবাহী বাল্কহেড নিউ ধলেশ্বরী নদী দিয়ে চলে। এর ফলে কালিহাতীর বালিয়া চরা, চর ভাবলা, ধলা টেঙ্গর, শল্লা, জোকারচর, হাতিয়া, দশকিয়া, বালিয়াচড়া, আনালিয়াবাড়ী, বেনুকুর্শা, বেরিপটল, কদিম হামজানি, চর হামজানীসহ অন্তত ২০-২৫টি গ্রামের শতাধিক পরিবার ও শত শত বিঘা ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।
হাতিয়া, দশকিয়া ও বালিয়াচড়া গ্রামের অসংখ্য পরিবার ইতোমধ্যেই সর্বস্ব হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বালিয়া চরা গ্রামের মানুষজন।
নদীভাঙনে ক্ষুব্ধ হয়ে স্থানীয়রা ধলাটেঙ্গর, পাথাইলকান্দি, এলেঙ্গা ও পৌলি এলাকার প্রায় ২০টি বালুঘাটে পরিবহন বন্ধ করে দেয়। এতে প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ীরা ক্ষিপ্ত হয়ে হাতিয়া, দশকিয়া ও বালিয়াচড়া গ্রামের অন্তত ১২টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান জোরপূর্বক বন্ধ করে দেয়। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে দোকানগুলো আবার খোলা হয়।
এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হালিম সরকার বলেন, “বিষয়টি অন্যায়ভাবে করা হয়েছিল। পরে আমি দোকানগুলো খুলে দিই।”
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মতিউর রহমান বলেন,“এই বিষয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও যৌথ বাহিনীর অভিযান হয়েছে। কিন্তু আমরা অভিযান চালালেই কিছুদিন বন্ধ থাকে, পরে আবার চালু হয়। আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি এটি নির্মূল করার।”
এ বিষয়ে কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. খায়রুল ইসলাম বলেন,
“আমি বিষয়টি এখনো অবগত নই। তবে লিখিত অভিযোগ পেলে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”


















