রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নিজেকে ‘ইমাম মাহাদি’ দাবি করা নুরুল হক ওরফে ‘নুরাল পাগলা’র লাশ কবর থেকে তুলে পুড়িয়ে দিয়েছে তৌহিদী জনতা। এর আগে তার দরবার শরিফ ও বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ চালানো হয়।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) জুমার নামাজের পর গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের জুড়ান মোল্লাপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ ও দরবারের ভক্তসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়ি ও পুলিশের দুটি গাড়ি।
জুমার নামাজের পর ‘ঈমান আকিদা রক্ষা কমিটি’র ব্যানারে মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ফকির মহিউদ্দিন আনসার ক্লাবে বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু হয়। বিক্ষোভ শেষে জনতা দরবার শরিফের দিকে অগ্রসর হলে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়। একপর্যায়ে শত শত মানুষ দরবারে প্রবেশ করে ভাঙচুর চালায় এবং ভক্তদের ওপর হামলা করে। পরে নুরুল হকের মরদেহ কবর থেকে তুলে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পদ্মার মোড়ে নিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়।
• আহত: স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের অন্তত ৭ জনসহ অর্ধশতাধিক
• ভাঙচুর: ইউএনওর গাড়ি, পুলিশের দুটি গাড়ি
• হাসপাতালে ভর্তি: গোয়ালন্দ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২২ জন, এর মধ্যে ৩ জন ভর্তি, ১৯ জন ফরিদপুর মেডিকেলে পাঠানো
২৩ আগস্ট বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় মারা যান নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলা। পরে তার প্রতিষ্ঠিত দরবার শরিফে উঁচু বেদিতে তাকে দাফন করা হয়। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় আলেম সমাজের বিরোধিতা শুরু হয়। তারা কবর নিচু করা, রঙ পরিবর্তন ও ‘ইমাম মেহেদি দরবার শরিফ’ লেখা সাইনবোর্ড অপসারণের দাবি জানায়। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে কিছু দাবি মানা হলেও শুক্রবারের বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদুর রহমান বলেন, “আমাদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে দরবার ও বাড়িতে হামলা চালানো হয়েছে। ইউএনওর গাড়ি ও পুলিশের দুটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।”
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি রাকিবুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।