নিজস্ব সংবাদদাতা :
ভালো বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে লিথুনিয়া পাঠানোর নামে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার তাউসি গ্রামের ইসমাইল হোসেন বরজু নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী ব্যক্তি সর্বস্ব হারিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে এখন বিপাকে পড়েছেন।
এলাকায় একাধিকবার গ্রাম্য সালিস হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। পরে পাওনা টাকা ফেরত পেতে ভুক্তভোগী সম্প্রতি ঢাকার চায়না নয়াপল্টন অবস্থিত আলী ট্যুর এন্ড ট্রাভেলস এর প্রোপাইটর মোঃ চেরাগ আলীর পুত্র মোঃ মকছুদ আলী (৪০), মৃত আব্দুল মতলিব এর পুত্র মোঃ চেরাগ আলী (৫৮), চেরাগ আলীর পুত্র কিম্মত আলী ৩৮), মৃত মকবুল হোসেনের পুত্র জনি মিয়া (২৫) এর বিরুদ্ধে হবিগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালতে মামলা করেছেন।
মামলার আরজি ও ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভালো বেতনের চাকরি ও সুযোগ-সুবিধার প্রলোভন দেখিয়ে লিথুনিয়া পাঠানোর কথা বলে মকছুদ আলী, চেরাগ আলী, কিম্মত আলী ও জনি মিয়া ওই চারজন মিলে ইসমাঈল হোসেন বরজু’র কাছ থেকে গত বছরের ১ জুন ২০২২ থেকে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত কয়েক কিস্তিতে ১৬ লাখ টাকা নেন।
এরপর মামলায় অভিযুক্ত আসামিরা ৬ মার্চ ২০২৩ তারিখে ইন্ডিয়া থেকে লিথুনিয়া ভিসা দিবে বলে সেখানে ৪৬ দিন থাকার পরে দেশে ফেরত আনে। পরবর্তীতে লিথুনিয়া পাঠাবে বলে ২০২৪ সালের আগস্টের ২৮ তারিখ ভিয়েতনাম পাঠায় সেখান থেকে ফ্লাইট দিতে না পেরে ৭ দিন পরে দেশে ফেরত আনে। পরবর্তীতে ২০২৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর আবারও শ্রীলঙ্কা থেকে লিথুনিয়া পাঠাবে বলে সেখানে ১৮ দিন রেখে লিথুনিয়া পাঠাতে ব্যর্থ হলে দেশে ফেরত আনে।
ইন্ডিয়া, ভিয়েতনাম, শ্রীলঙ্কা ভিসা প্রসেসিং, টিকেট সহ থাকা খাওয়ার বাবদ আরও ৬ লাখ টাকা বহন করতে হয় ভুক্তভোগী ইসমাইল হোসেন বরজু কে।
পরবর্তীতে ভুক্তভোগী দেখেন তাকে জাল (নকল) ভিসা দিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর ভুক্তভোগীর তাঁর টাকা ফেরত চান। এর পর থেকে অভিযুক্তরা তাকে বিদেশে পাঠানোর কথা বলে কালক্ষেপণ করতে থাকেন। এ নিয়ে এলাকায় একাধিকবার সালিসও হয়।
ইসমাইল হোসেন বরজু বলেন, বিদেশে যাওয়ার জন্য জমি বিক্রি ও বন্ধক রেখে ১৬ লাখ টাকা দিয়েছেন। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে সংসারের খরচ মেটানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
বরজু আরও বলেন, বিদেশে পাঠানোর কথা বলে টাকা আত্মসাতের বিষয়ে একাধিকবার সালিস বৈঠক হয়েছে। সুরাহা না হওয়ায় তিনি আদালতে মামলা করেছেন।
টাকা নেওয়ার বিষয় অস্বীকার করে (অভিযুক্ত চার ব্যক্তি) মকছুদ আলী, চেরাগ আলী, কিম্মত আলী ও জনি মিয়া গত ১৬ মে ২০২৫ বিকেলে বলেন, ভুক্তভোগী আমাকে কোনো টাকাপয়সা দেননি।
তবে আব্দুল গনি, কামরুল মিয়া, জবরু মিয়া, ফজলু মিয়া, এখলাছ মিয়া, রাজু মিয়া তালুকদার বলেন, গ্রাম্য সালিসে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে মকছুদ আলী, চেরাগ আলী, কিম্মত আলী ও জনি মিয়া টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। ওই সালিসে তারা উপস্থিত ছিলেন।
মামলার খবর শুনে প্রতারকরা বরজু’কে হত্যা গুমসহ বিভিন্ন মামলায় জড়ানোর কথা লোক মুখে বলে ভয় ভীর্তি প্রদর্শন করছে বলেও মামলার বাদি ঈসমাইল হোসেন বরজু অভিযোগ করেন।