শাহবাগে প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ দমনে পুলিশের লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান ব্যবহারের ঘটনা ঘটেছে।
এ সময় এক শিক্ষার্থীর মুখ চেপে ধরার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুমুল আলোচনার জন্ম দেয়। ছবিটি নিয়ে পুলিশ দাবি করেছে—এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে তৈরি, বাস্তব নয়। তবে ঘটনাস্থলে থাকা তিন দৈনিক পত্রিকার ফটো সাংবাদিকরা পুলিশের এই দাবি খণ্ডন করেছেন।
পুলিশের দাবি
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মাসুদ আলমকে নিয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে একটি ছবি তৈরি করা হয়েছে। ছবিটি বাস্তব নয়, জনমনে বিভ্রান্তি ছড়াতেই প্রচার করা হয়েছে।”
ফ্যাক্ট-চেক
তবে ‘সাইট ইঞ্জিন’ নামের একটি অ্যাপে ছবিটি যাচাই করে দেখা গেছে, এটি এআই জেনারেটেড নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাইফুল আলম চৌধুরীও পুলিশের দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, ছবিটির গঠনগত বৈশিষ্ট্য দেখলেই বোঝা যায় এটি আসল। তিনি মন্তব্য করেন, “মেটাডেটা বিশ্লেষণই ছবির সত্যতা যাচাইয়ের সঠিক পদ্ধতি। পুলিশের মধ্যে এমন সক্ষমতা নেই।”
ফটো সাংবাদিকদের বক্তব্য : মানবজমিনের ফটো সাংবাদিক আবু সুফিয়ান জুয়েল বলেন, “এটা আমি নিজেই তুলেছি। আমার ছবিই সাক্ষী।”
বাংলাদেশ প্রতিদিনের জয়ীতা রায় জানান, “দুপুর ২টার দিকে ইন্টারকন্টিনেন্টালের মোড়ে ছবিটি তুলি। ওই সময় আমার আশপাশেই ছিলেন ডেইলি স্টারের অর্কিড চাকমা ও মানবজমিনের আবু সুফিয়ান।”
ডেইলি স্টারের ফটো সাংবাদিক অর্কিড চাকমাও বলেন, “ওই মুহূর্তে আরও কয়েকজন ছবিটি তুলেছেন। এআই দিয়ে বানানো হওয়ার প্রশ্নই আসে না।”
প্রেক্ষাপট
বুধবার দুপুরে তিন দফা দাবিতে শাহবাগে বুয়েটসহ প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা জড়ো হন। প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ঘেরাওয়ের উদ্দেশে মিছিল নিয়ে এগোতে গেলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশের হামলার একাধিক ভিডিওও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
প্রতিক্রিয়া
মুখ চেপে ধরার ছবিকে ঘিরে সমালোচনায় পড়েছে পুলিশ। অনেকেই বলছেন, এটি গত বছরের জুলাই আন্দোলনের সময়কার প্রতীকী ছবির পুনরাবৃত্তি। শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার শাস্তি দাবি করেছেন। এদিকে পুলিশ কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী রাতেই শাহবাগে গিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন।