বাংলা ভয়েস ডেস্ক :
কবি নজরুল, সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ মোকাবিলায় পুলিশের দুর্বলতা ছিল বলে স্বীকার করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
আজ সোমবার (২৫ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর হেয়ার রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে অন্তর্বর্তী সরকারের আরেক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমও উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা নাহিদ বলেন, ‘যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পুলিশের দুর্বলতা ছিল বলেই এমন ঘটনা ঘটেছে, এটা তো আমরা স্বীকার করেছি। পুলিশকে সক্রিয় করতে পুলিশে রদবদল চলছে।
রোববার ভুল চিকিৎসায় অভিজিৎ হাওলাদার নামের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর অভিযোগের জেরে পুরান ঢাকার ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ এবং শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীরা।
এর জেরে সোমবার দুপুরে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে হামলা ও ভাঙচুর চালায় ওই সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ সময় দুপক্ষেরই অন্তত ৩৫ জন আহত হয়। ঘোষণা দিয়ে এমন হামলার পরও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এরই মধ্যে সোহরাওয়ার্দী কলেজে হামলায় ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজসহ বিভিন্ন কলেজের আট হাজার শিক্ষার্থীর নামে ভাঙচুর ও গুলি ভর্তি ম্যাগাজিন চুরির অভিযোগে সূত্রাপুর থানায় মামলা করেছে পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, ‘কলেজের সংঘর্ষের ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সকাল থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চেষ্টার ফলেও সংঘর্ষ এড়ানো যায়নি। যারা দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ ভবিষ্যতে আর এ ধরনের ঘটনা সহ্য করা হবে না। কোনো মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
আসিফ মাহমুদ আরও বলেন, ‘পুলিশে নতুন নিয়োগে কাজ চলছে। পরিবর্তন আনতে সময় প্রয়োজন। সবার প্রতি ধৈর্য ধরার আহ্বান থাকবে আমাদের।
সংঘর্ষ এড়াতে পুলিশ রাবার বুলেট ব্যবহার করেছে জানিয়ে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘পুলিশ যখন আক্রান্ত হয় তখন তারা রাবার বুলেট ব্যবহার করেছে। পুলিশ, সেনাবাহিনী শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে। কেন এ ঘটনা ঘটল, তা তদন্তের আগে বলা যাবে না।
কোনো গণমাধ্যমে হামলা চালানো হলে তা সরকার সহ্য করবে না বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, ‘কোনো মিডিয়ায় হামলার ঘটনা আবার ঘটলে, সহ্য করা হবে না। আমরা কোনো মিডিয়া বন্ধের পক্ষে নই।
উপদেষ্টা নাহিদ বলেন, ‘একদিনে এতগুলো ঘটনা কাকতালীয় মনে করি না। সরকারের কাজে ব্যাঘাত ঘটাতে, সরকারের লক্ষ্য নষ্ট করতে একটা ষড়যন্ত্র তো আছে। দেশি-বিদেশি নানা ইন্ধনের বিষয়ও আছে। কারা এসব বিষয়ে জড়িত, তা তদন্তে কাজ চলছে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তথ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘মিথ্যা প্রচারণা করে ঢাকার বাইরে থেকে শাহবাগে মানুষ আনা হয়েছে। এর সংগঠককে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস আটকের বিষয়ে করা প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আটকের ব্যাপারে ডিএমপি আপনাদের জানাবে। আমরা জেনেছি তার নামে কোতোয়ালি থানায় মামলা আছে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এসব ঘটনার পেছনে অন্য কোনো মটিভেশন আছে কি না, তা আমরা নিশ্চিত নই।