মোঃ মনির মন্ডল,সাভার সংবাদদাতা
সাভারে গৃহকর্তার কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ও কাজ ছেড়ে দেয়ায় সাজেদা বেগম (২০) নামের এক গৃহকর্মীকে অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। চুরির অপবাদ দিয়ে ওই গৃহকর্মীকে মারধর, শরীরে প্লাস ও সুই বিধিয়ে অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে সাভারের এক গৃহকর্তা ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে।
গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ভুক্তভোগীকে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। সোমবার রাতে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিজের সাথে ঘটে যাওয়া নির্যাতনের বর্ণনা দেন ভুক্তভোগী গৃহকর্মী সাজেদা বেগম। ভুক্তভোগীর অভিযোগ, গৃহকর্তার কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ও কাজ ছেড়ে দেয়ায় তাকে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়েছে।
নির্যাতনের শিকার সাজেদা বেগম কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী থানার বোর্ড বাজার গ্রামের আব্দুল মালেকের স্ত্রী। ভুক্তভোগী ওই নারী তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের ঝাউচর এলাকায় মঞ্জুর গাজীর বাসায় ভাড়া থেকে এলাকায় গৃহকর্মীর কাজ করেন।
ভুক্তভোগী গৃহকর্মী সাজেদা বেগম বলেন আমি গরীব, মানুষের বাসায় কাজ করি। আমি এই কাজ করব না। এই কারণে আমাকে চোর বানাইছে সে। বলে, কে চুরি করছে তারে ধইরা আন। আমাকে অনেক মারছে।
তারপর আমি চুরি করছি সেটা জোর করে স্বীকার করিয়ে মোবাইলে রেকর্ড করছে। স্বীকার করানোর জন্য সারাদিন তুহিন ও তার কারখানার ৪/৫ জন মিলে মোটা পাইপ দিয়ে আমার কাপড় খুলে সারা শরীরে পিটাইছে। গলা চিপে ধরে পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ফাঁকে সুই বিধিয়ে নির্যাতন করেছে। প্লাস দিয়ে হাতের আঙ্গুলে চাপ দিয়ে জখম করেছে তারা। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আমাকে সোমবার রাতে ভর্তি করা হয়।
তবে অভিযুক্ত গৃহকর্তা মো. তুহিন ও তার সঙ্গীদের সাথে এ বিষয়ে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়েমুল হুদা জানান, সোমবার রাতে সাজেদা বেগমকে গুরুতর অবস্থায় আমাদের হাসপাতালে আনা হয়। তার সারা শরীরে মারধর, সুই ফুটিয়ে বিভিন্ন স্থানে আঘাতসহ প্লাস দিয়ে আঙুল চাপা হয়েছে। বিষয়টি অত্যন্ত অমানবিক। এভাবেও কাউকে মারধর করা যায়! তবে আমরা তাকে যথাযথ চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি। আশা রাখি শীঘ্রই সে সুস্থ্য হয়ে উঠবে। খুব দ্রুতই তিনি বাসায় ফিরতে পারবেন।
এবিষয়ে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকবর আলী খান বলেন, চুরির অপবাদে নির্যাতনের ঘটনায় আপনাদের কাছ থেকেই শুনলাম। কিন্তু এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেব।