অন্তু কুমার দাস (হৃদয়), টাঙ্গাইল সংবাদদাতা :
টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের নেতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারী ফারুক আহমদ হত্যা মামলায় উচ্চ আদালত শর্তসাপেক্ষে টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের ও সাবেক পৌর মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তির জামিন দিয়েছেন।
আজ বুধবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে তিনি টাঙ্গাইল কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে পৌর শহরের কলেজ পাড়ার বাসায় ফিরেছেন।
টাঙ্গাইল জেল সুপার মোখলেসুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, উচ্চ আদালতের জামিন সংক্রান্ত কাগজপত্র বুধবার টাঙ্গাইল কারাগারে পৌঁছলে সকল নিয়ম মেনে দুপুরে সহিদুর রহমান খান মুক্তি কে জেল থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।
এর আগে গত সোমবার হাইকোর্টের ৯ নম্বর আদালতের বিচারপতি রেজাউল হাসান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ফারুক হত্যা মামলায় টাঙ্গাইল পৌর সভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তির জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।
এ বিষয়ে সহিদুর রহমান খান মুক্তির আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ আব্দুল মুনতাকিম জানান, বিচার কদ্বয় টাঙ্গাইলের ফারুক হত্যা মামলায় সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তির ৬ মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেছেন।
আদালত সূত্রে, গত (১৯ জুলাই) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. বদরুজ্জামান ও বিচারপতি এসএম মাসুদ হোসেন দোলনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ তথ্যগোপণ করে জামিন আবেদন করায় সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তির জামিন আবেদন খারিজ করে দেন।
একই সঙ্গে তথ্য গোপন করে জামিন আবেদন করায় তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানার ভাই এবং বর্তমান টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সাংসদ আতাউর রহমান খানের ছেলে।
প্রসঙ্গ, ২০১৩ সালের (১৮ জানুয়ারি) টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফারুক আহমদের গুলিবিদ্ধ লাশ তার কলেজ পাড়ার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার হয়।
এ ঘটনার তিন দিন পর নিহত ফারুক আহমদের স্ত্রী নাহার আহমদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
এই হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ২০১৪ সালের আগস্টে গোয়েন্দা পুলিশ আনিসুল ইসলাম রাজা ও মোহাম্মদ আলী নামে দুই জনকে গ্রেপ্তার করে।
আদালতে এ দুই জনের দেওয়া স্বীকারোক্তিতে হত্যার সঙ্গে তৎকালীন সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা, তার তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার তৎকালীন মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন ও ছাত্রলীগের তৎকালীন কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পার জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসে। এরপর অভিযুক্তরা আত্মগোপনে চলে যান।
পরে, আমানুর রহমান খান রানা ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আত্মসমর্পণ করেন।
প্রায় তিন বছর হাজত বাসের পর তিনি জামিনে মুক্তি পান। অভিযুক্ত সহিদুর রহমান খান মুক্তি দীর্ঘ ছয় বছর পলাতক থাকার পর ২০২০ সালের (২ ডিসেম্বর) আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। এরপর দফায় দফায় জামিনের আবেদন করলেও আদালত প্রতিবারই আবেদন নামঞ্জুর করেন। তাদের অন্য দুই ভাই এখনও আত্মগোপনে রয়েছেন।