এম আর সজিব সুনামগঞ্জ:
সুনামগঞ্জে বেসরকারি কোম্পানি সাআইদৌলা প্রাইভেট লিমিটেড এর কর্মচারীদের কর্মস্থলে প্রবেশে দুষ্কৃতিকারী কর্তৃক বাঁধা প্রদান ও কর্মকর্তাদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণের প্রতিবাদে কর্মচারিদের বিক্ষোভ।
শনিবার ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ইং বিকেলে প্রতিষ্ঠানের ভেতরে কর্মরত কর্মচারীরা এই বিক্ষোভ করেছেন।
এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের অপারেশন ম্যানেজার মো:শফিকুল ইসলাম জানমালের নিরাপত্তা চেয়ে সদর মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছেন।
অভিযোগ মাধ্যমে জানা যায়, গত ৯ ডিসেম্বর বুধবার সাআইদৌলা প্রাঃ এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের সিনিয়র সুপার ভাইজার মোঃ আলী আকবর, সুপার ভাইজার মোঃ আনাস মিয়া,মো:ওমর ফারুক, মোঃ রাহী মিয়া, নিকুঞ্জ কুমার দাশ, শ্রমিক মোঃ শাহাবুদ্দিন, মোঃ এনাম, তুহিন মিয়া, অনিক গংরা মিলে আমাদের ফ্যাক্টরীর নিয়মিত উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় এবং ফ্যাক্টরীর ভিতরে থাকা সকল কর্মচারীদেরকে জোর পূর্বক বের করে দিয়ে অভ্যন্তরিণ সরাসরি বাঁধা সৃষ্টি করে। আমরা কোম্পানিতে কর্মরত কর্মকর্তারা বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য তাদের সাথে আলোচনা করার চেষ্টা করি কিন্তু তারা আমাদের কোন নির্দেশনা পালন না করে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে ফ্যাক্টরী থেকে বের হয়ে চলে যান। যার ফলে ফ্লোরে থাকা ৪-৫ টন মাছ নষ্ট হয়ে যায়।যার আনুমানিক বর্তমান বাজার মূল্য ৮/৯ লক্ষ টাকা। আমাদের ফ্যাক্টরীর অধিকাংশ নারী শ্রমিক। তারা কাজ করতে ইচ্ছুক কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালী দুষ্কৃতিকারী সুপারভাইজারদের ভয়ে তারা ফ্যাক্টরীতে প্রবেশ করতে পারছে না। বর্তমানে তারা গেটের সামনে অবস্থান করে বিভিন্ন সাপ্লাইয়ারদের মাছ প্রবেশে বাঁধাগ্রস্থ করছে, আমাদের হাতে প্রচুর পরিমাণ বৈদেশিক অর্ডার থাকায় রপ্তানি কার্যক্রম বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে। ঘটনার দিন একটা কন্টেইনার জরুরী রপ্তানি করার পরিকল্পনা থাকলেও রপ্তানি করা সম্ভব হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, কোম্পানিতে জরুরী রপ্তানি কার্যক্রম মাঝে মধ্যেই তারা বন্ধ করে দেয় এবং দেশের অর্থনৈতিক অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যহত করছে। ইতিপূর্বে ও বেশ কয়েকবার তারা এরুপ ঘটনা ঘটিয়েছে। তখন আমরা তাদেরকে বহুবার বুঝিয়ে সুজিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করি এবং আমাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে। আমাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে পূনরায় কাজে যোগদান করেছিল। ১৯৮৫ সাল হতে সুনামের সহিত বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সাদা মাছ রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। প্রতি বছর প্রায় ২৫-৩০ কোটি টাকা বা সমমূল্যের মার্কিন ডলার বাংলাদেশের রেমিট্যান্স বৃদ্ধিতে অবদান রাখছে এবং দেশের অর্থনৈতিক অবকাঠামো উন্নয়নে সহায়তা করছে। তিনি আরো বলেন,স্থানীয় কিছু সংখ্যক দুষ্কৃতিকারী প্রভাবশালী কর্মচারীর জন্য কোম্পানি মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। তারা কোম্পানির অভ্যান্তরে বিভিন্ন সময় নানা বিধ শ্রম আইন বিরোধী কর্মকান্ডে লিপ্ত থেকে আইন পরিপন্থী কাজ করছে। যেমন কর্মস্থলে যথা সময়ে উপস্থিত না হওয়া,উপস্থিত থেকে কাজ না করা,অযথা আইন নিজেদের হাতে তুলে নেয়া,শ্রমিকদের কাছ থেকে চাঁদা উত্তোলন সহ ইত্যাদি কাজে নিষেধ করলে কর্মরত কর্মকর্তাদের সহিত খারাপ আচরণ করা এবং নানা প্রকার হুমকি দিয়ে থাকেন।
বিক্ষোভ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন, কর্মচারী সামিরা বেগম, জাহেদা বেগম, শাপলা বেগম, আফিয়া বেগম, মাহমুদা বেগম, সাজেদা বেগম গং।
আফিয়া বেগম বলেন, আমি কর্মস্থলে আসার পথে কয়েকজন দুষ্কৃতিকারী আমাকে টেনে হেঁচড়ে লাঞ্ছিত করে আমার পরনের জামা ছিড়ে ফেলে।
শাপলা বেগম বলেন, আমি কর্মস্থলে না আসার জন্য আমার বাসায় গিয়ে দুষ্কৃতিকারীরা হুমকি ধামকি দেয়।
জাহেদা বেগম বলেন, আমরা প্রায় দেড় শতাদিক কর্মচারী মাছ কোম্পানিতে কাজ করে সংসার চালাই। এই কোম্পানি বন্ধ হয়ে গেলে আমরা নিরুপায় হয়ে যাবো।
অভিযোগকারী অপারেশন ম্যানেজার মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, গত ৯ ডিসেম্বর উল্লেখিত ব্যক্তিগন কোম্পানির নিয়োজিত সিকিউরিটি গার্ড চার জনকে জোরপূর্বক বের করে নিয়ে যায় এবং কোম্পানিকে সিকিউরিটি শূন্য করে কোটি টাকার মৎস্য সম্পদ বহিরাগত আক্রমণ হতে সুরক্ষায় ব্যাহত করে রাখছে। এদিকে অফিসার মেসের বাবুর্চিকেও কোম্পানির ভেতরে প্রবেশ করতে দেয় নাই এবং কর্মচারীদের সেপ্টেম্বর মাসের বেতন অক্টোবর মাসের ৬ তারিখ,অক্টোবর মাসের বেতন নভেম্বর মাসের ৫ তারিখ, নভেম্বর মাসের বেতন ডিসেম্বর মাসের ৮ তারিখে পূবালী ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধ করি। প্রতি বছরের জুন মাসে বেসিক বেতনের ১৫% ইনক্রিমেন্ট, শীতকালীন বোনাস, হাজিরা বোনাস, উৎসব বোনাস, খেলাধুলার সু-ব্যবস্থাসহ ওভার টাইম ও নাস্তার বিল পর্যন্ত দেয়া হয়। এ ঘটনায় জানমালের নিরাপত্তা চেয়ে সদর মডেল থানায় ডায়েরী করেছি।
সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ রতন সেখ বলেন, অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।


















