ভাই হত্যার মামলা ও বিভিন্ন জালিয়াতি-প্রতারণার অভিযোগ ‘ধামাচাপা দিতে’ ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘১০০ কোটি টাকা ঘুষ’ দেওয়ার অভিযোগে ট্রান্সকম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সিমিন রহমানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে সংস্থার একজন উপপরিচালককে এই অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দুদক সূত্র বলছে, ইতিমধ্যে তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
দুদকের একটি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সিমিন রহমানের বিরুদ্ধে ‘হত্যা, শেয়ার জালিয়াতি ও প্রতারণা’–সংক্রান্ত একাধিক মামলা নিষ্পত্তি করতে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কাছে বড় অঙ্কের ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সম্পৃক্ততা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এর আগে প্লট দুর্নীতির তিন মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ২১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
অন্যদিকে ব্যবসায়ী গোষ্ঠী ট্রান্সকমের মধ্যে পারিবারিক বিরোধ তীব্র আকার ধারণ করে যখন লতিফুর রহমানের ছোট মেয়ে শাযরেহ হক তার বড় বোন সিমিন রহমানের বিরুদ্ধে ভাই আরশাদ ওয়ালিউর রহমানকে হত্যার অভিযোগে মামলা করেন।
২০২৪ সালের ২১ মার্চ গুলশান থানায় করা সেই মামলায় সিমিন রহমান, তার ছেলে এবং ট্রান্সকম গ্রুপের হেড অব ট্রান্সফরমেশন যারাইফ আয়াত হোসেনসহ মোট ১১ জনকে আসামি করা হয়। মামলার পটভূমিতে জানা যায়, ২০২৩ সালের ১৬ জুন গুলশানের বাসার শোয়ার ঘর থেকে আরশাদ ওয়ালিউর রহমানের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
মামলার পর হাইকোর্ট ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ সিমিন রহমানসহ তিনজনকে দেশে ফেরার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।
এর আগে শাযরেহ হক তার পরিবারের সদস্য ও প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, সম্পত্তি দখল ও অবৈধভাবে শেয়ার হস্তান্তর–সংক্রান্ত তিনটি মামলা করেছিলেন। ওই মামলাগুলোতে ট্রান্সকমের পাঁচজন কর্মকর্তা গ্রেপ্তার হন এবং পিবিআই গুলশানে ট্রান্সকমের হেড অফিস থেকে বেশ কিছু নথি জব্দ করে।
২০২০ সালের ১ জুলাই ট্রান্সকম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা লতিফুর রহমান মারা যাওয়ার পর তার স্ত্রী শাহনাজ রহমান চেয়ারম্যান এবং বড় মেয়ে সিমিন রহমান গ্রুপের সিইও হন। আর ছোট মেয়ে শাযরেহ হক পরিচালকের দায়িত্বে থাকেন। পারিবারিক এই দ্বন্দ্বের জের ধরেই মামলাগুলো সামনে আসে। নতুন করে ওঠা ঘুষের অভিযোগ নিয়ে ট্রান্সকম গ্রুপের মিডিয়া, লিগ্যাল, জনসংযোগ বিভাগ কিংবা কোম্পানি সচিবের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।


















