সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষীপুর ইউনিয়নের সুড়িগাঁও গ্রামের প্রতিবন্ধী পরিবার ও স্থানীয় চামতলা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার জমি সংক্রান্ত বিরোধ সাত বছরেও নিষ্পত্তি হয়নি। জেলা আইনগত সহায়তা সংস্থা (লিগ্যাল এইড) লিখিতভাবে উভয়পক্ষের মধ্যে সমঝোতা করিয়ে মামলা প্রত্যাহার করালেও, বাস্তবে এখনো চলছে প্রকাশ্য বিরোধ।
জানা যায়, প্রতিবন্ধী জিয়াউল হকের বসতবাড়ি ও রেকর্ডীয় জমি মাদ্রাসার পাশে অবস্থিত। সুড়িগাঁও মৌজার ৯৮ নং জে.এল-এ ৫৪৮ খতিয়ানভুক্ত ৩৬৩ নং দাগে তার ক্রয়কৃত ০.৬৫ একর জমির মধ্যে ১৫ শতক মাদ্রাসার মাঠে পড়ে।
অভিযোগ রয়েছে, মাদ্রাসার সুপার আব্দুল হক উদ্দেশ্যমূলকভাবে সেটেলমেন্ট জরিপে উক্ত জমি মাদ্রাসার নামে রেকর্ড করান, যার ফলে দীর্ঘদিন ধরে স্বত্ব মামলা চলে আসছে। পরবর্তীতে সালিশি ও লিগ্যাল এইড কমিটির সিদ্ধান্তে উভয়পক্ষ জায়গা বিনিময়ে সম্মত হয় এবং চুক্তিপত্রে স্বাক্ষরও করে।
কিন্তু ২০১৮ সালের ১ আগস্ট জিয়াউল হকের নতুন টিনের ঘর নির্মাণের সময় মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারীরা হামলা ও ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ ওঠে। এতে জিয়াউলের স্ত্রী গোলাপজান ও প্রতিবন্ধী সন্তানরা আহত হন। ওই ঘটনায় দোয়ারাবাজার থানায় মামলা হয় (নং ৯৩/৮.৮.২০১৮), যেখানে মাদ্রাসা সুপার আব্দুল হক প্রধান আসামী। এর পাল্টা হিসেবে তিনিও জিয়াউল হকের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা (নং ৯৪/১০.৮.২০১৮) দায়ের করেন। এরপর জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার মো. হাবিবুল্লাহ মাহমুদ ১৬ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে চার দফা চুক্তির মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। শর্ত অনুযায়ী বিনিময় দলিল ও জায়গা পরিমাপের কাজ জানুয়ারি ২০১৯-এর মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি।
২০২২ সালের ৩১ মে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার পুনরায় ইউপি চেয়ারম্যানকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিলেও কোনো অগ্রগতি হয়নি। ফলে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ভূক্তভোগী জিয়াউল হক বলেন, “আমার ক্রয়কৃত জায়গা যথাযথভাবে পরিমাপ করে মাদ্রাসার সাথে সীমা নির্ধারণ করলে আমি উপকৃত হবো।”
ইউপি চেয়ারম্যান মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, “লিগ্যাল এইড কমিটির নির্দেশে আমি দুপক্ষকে নিয়ে বসেছিলাম, কিন্তু তারা পরে আবার বিরোধে জড়িয়ে পড়ে।”
এলাকাবাসীর দাবি, জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়িত হলেই এই দীর্ঘদিনের জমি বিরোধের স্থায়ী সমাধান সম্ভব।


















