উজানের পাহাড়ি ঢল ও টানা ভারী বৃষ্টিতে কুড়িগ্রামের নদ–নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এর সঙ্গে ভারত থেকে ভেসে এসেছে হাজারো গাছের গুঁড়ি। লালচে রঙ ও বাকলহীন এসব কাঠ দেখে স্থানীয়রা এগুলোকে ‘চন্দন কাঠ’ ভেবে নদীতে নেমে ধরতে শুরু করেছেন।
এর আগে রোববার (৫ অক্টোবর) ভোর থেকে কালজানি, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্র নদে কাঠের গুঁড়ি ভেসে আসে। শত শত মানুষ নৌকা, ভেলা ও সাঁতার কেটে কাঠ ধরতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। পরে তীরে এনে অনেকেই বিক্রিও শুরু করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একেকটি কাঠের গুঁড়ি ২০ থেকে ৩৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কোথাও দাম আরও চড়া। নাগেশ্বরীর পাটেশ্বরী এলাকার আবেদ আলী বলেন, “চারজন মিলে বড় একটি লালচে গাছ তুলেছি। দেখতে একদম চন্দনের মতো, দাম চেয়েছি দেড় লাখ টাকা।”
তবে বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এসব কাঠ প্রকৃত চন্দন নয়। দীর্ঘদিন পানিতে থাকার কারণে কাঠের রঙ লালচে হয়েছে। বেশিরভাগই সাধারণ পচা কাঠ।
শিলখুড়ি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইউসুফ আলী বলেন, ‘শুধু গাছে গাছ দেখা যাচ্ছে। লোকজন নৌকা দিয়ে সাঁতরিয়ে গাছ ধরে আনছে। এতো গাছ নিদিষ্ট কোথা থেকে আসছে দেখা যাচ্ছে না। তবে ধারণা করা হচ্ছে ভারত থেকেই।’
কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিদ মির্জা নাসির উদ্দিন বলেন, “কাঠে থাকা ট্যানিন ও ফেনলিক যৌগ বাতাসের সংস্পর্শে এসে লালচে রঙ ধারণ করে। তাই সাধারণ কাঠও চন্দনের মতো দেখায়, কিন্তু এতে কোনো গন্ধ বা তেলীয় উপাদান নেই।”
স্থানীয় প্রশাসনের ধারণা, ভুটান হয়ে ভারতের হাসিমারা বনাঞ্চল থেকে কালজানি নদীর স্রোতে এসব কাঠ ভেসে এসেছে। বন বিভাগ ইতোমধ্যে কাঠের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা শুরু করেছে।