বিএনপির সাবেক মহাসচিব মরহুম খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের পরিবারকে জিম্মি করে জোরপূর্বক চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্তরা নিজেদের স্থানীয় যুবদল নেতা-কর্মী পরিচয় দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, তারা ভয়ভীতি দেখিয়ে এক লাখ টাকা দাবি করেন। পরে ভয়ে ভুক্তভোগী মগবাজারের একটি বুথ থেকে ৮০ হাজার টাকা তুলে দেন এবং আরও ২০ হাজার টাকার একটি চেকে স্বাক্ষর করতে বাধ্য হন।
ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার (৩ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর হাতিরঝিল থানাধীন নয়াটোলা গ্রীনওয়ে এলাকার ৬৫৩ নম্বর বাসার ৪/বি ফ্ল্যাটে। পরদিন শনিবার হাতিরঝিল থানায় এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেন মরহুম খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের পুত্রবধূ তানজিন হামিদ মিতুল।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, কথিত যুবদল কর্মী শাওন (২৫), হাবিব (৩৫), সাজিদ (২২) ও সানি (৩৫) ওই রাতে বাসায় গিয়ে চাঁদা দাবি করেন।
তানজিন হামিদ মিতুল জানান, “রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে আমার বড় বোন শারমিন ওয়াদুদ নিপা ফোন করে বলেন, জরুরি ভিত্তিতে এক লাখ টাকা দরকার। রাত ১১টা ২০ মিনিটে আমি তার বাসায় যাই। দেখি, চার যুবক সেখানে উপস্থিত। জিজ্ঞেস করলে শাওন কোমরে থাকা অস্ত্র দেখিয়ে ভয় দেখায়। তারা আমার বড় বোনের কাছ থেকে এক লাখ টাকা দাবি করে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা নিজেদের পরিচয় দেওয়ার পরও তারা আরও খারাপ আচরণ করে। পরে তারা আমাদের ফোন কেড়ে নেয়, কাউকে ফোন করতে দেয়নি, এমনকি বাচ্চাদের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করে। নগদ টাকা না থাকায় তারা আমাকে বুথে গিয়ে টাকা তুলতে বলে। আমি রাত ১১টা ৫৭ মিনিটে মগবাজার সিটি ব্যাংকের বুথ থেকে ৮০ হাজার টাকা তুলে সানিকে দিই এবং আরও ২০ হাজার টাকার একটি চেক দিই।”
পরের দিন শনিবার রাত ১২টা ২০ মিনিটে তারা আবারও ওই বাসায় গিয়ে ফ্ল্যাট খালি করার হুমকি দেয়। তারা বলে, আগামী মাসের মধ্যে ফ্ল্যাট খালি না করলে তার বোন ও সন্তানদের হত্যা করা হবে।
এ বিষয়ে হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাজু বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত চলছে। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আসামিদের শনাক্ত ও তাদের রাজনৈতিক পরিচয় যাচাই করা হচ্ছে। মামলা নেওয়া হবে এবং আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে।”
প্রসঙ্গত, খন্দকার দেলোয়ার হোসেন বিএনপির ষষ্ঠ মহাসচিব ছিলেন।
তিনি ঢাকা-১ ও মানিকগঞ্জ-১ আসন থেকে পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ভাষা আন্দোলনে ভূমিকার স্বীকৃতি হিসেবে ২০০৫ সালে একুশে পদক পান। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি সরকারদলীয় ও বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ, পার্লামেন্ট মেম্বার্স ক্লাবের সভাপতি এবং নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
২০১১ সালের ১৬ মার্চ সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।