মোঃ শিহাব উদ্দিন, গোপালগঞ্জ সংবাদদাতা :
গোপালগঞ্জে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এর চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রকে আটকে রেখে গোপনাঙ্গে আঘাত ও গোপনাঙ্গ কাটার ভয় দেখিয়েছে স্কুলের ২ সহকারী শিক্ষিকা -অভিযোগ ছাত্ররের মায়ের। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সাংবাদিকদের নজরে আসে।
এ ঘটনায় স্কুল ছাত্রের মা সুমি বেগম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিখিত অভিযোগটি উপজেলা শিক্ষা অফিসার কে তদন্তের নির্দেশ দেন। উপজেলা শিক্ষা অফিসার ঘটনাস্থান তদন্ত করে সত্যতা পেয়ে জেলা শিক্ষা অফিসারের বরাবর প্রেরণ করেন।
পরে জেলা শিক্ষা অফিসার ঘটনায় অভিযুক্ত ওই স্কুলের সহকারি শিক্ষিকা সুমাইয়া হায়দার ও সারিনা খানমকে কারন দর্শনের নোটিশসহ লিখিত জবাব দেওয়ার জন্য বলা হয়।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ১০৪ নং মাদ্রাসা সংলগ্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুমাইয়া বিনতে হায়দার ও সাবরিনার বিরুদ্ধে এক ছাত্রকে শারীরিকভাবে নির্যাতনের অভিযোগে তদন্ত করে সুমাইয়া হায়দার ও সাবরিনা খানমের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করেছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার।
উল্লেখ্য যে ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী তাওসিয়াদের মা সুমি বেগম ২৬ মে ২০২৫ তারিখে লিখিত অভিযোগে জানান, তার সন্তানের গোপনঙ্গে আঘাত ও চাকু দিয়ে কাটার হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়েছেন স্কুলের ২ শিক্ষিকা। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পলাশ সরদার ২৭ মে ২০২৫ তারিখে ঘটনা স্থানে গিয়ে তদন্ত করেন। তদন্তে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও অন্যান্য শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
এ ঘটনায় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোছা: জ্যোৎস্না খাতুন ২৩ জুন ২০২৫ তারিখে একটি অভিযোগনামা জারি করেন, যেখানে বাংলাদেশ সরকারের “সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা, ২০১৮” এর ৩(খ) ধারায় অসদাচরণ অভিযোগে সুমাইয়া বিনতে হায়দার ও সাবরিনাকে অভিযুক্ত করা হয়।
অভিযোগপত্রে তাদেরকে কেন চাকরি থেকে বরখাস্ত অথবা অন্য উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করা হবে না, তার লিখিত জবাব ১০ কর্মদিবসের মধ্যে জমা দিতে বলা হয়েছে। একই সাথে, তারা ব্যক্তিগত শুনানিতে অংশ নিতে আগ্রহী কিনা তাও জবাবে উল্লেখ করতে বলা হয়েছে।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জবাব না পেলে, তা এক তরফাভাবে ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হিসেবে বিবেচিত হবে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
এ সংক্রান্ত অনুলিপি মহাপরিচালক, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর; বিভাগীয় উপ-পরিচালক, ঢাকা বিভাগ এবং উপজেলা শিক্ষা অফিসার, গোপালগঞ্জ সদরকে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানাগেছে।
এ বিষয়ে উভয় শিক্ষিকা জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত জবাব দিয়েছে বলে জানিয়েছেন
জেলা শিক্ষা অফিসার মোছাম্মৎ জোসনা খাতুন।
এ বিষয়ে সহকারী শিক্ষিকা সুমাইয়া হায়দার ও সাবরিনা খানমের সাথে বারবার যোগাযোগ করেও তাদেরকে পাওয়া যায়নি। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শহরের বিভিন্ন মহল থেকে রিপোর্টটি প্রকাশ না করার জন্য একাধিক বার অনুরোধ করেন।