মোঃ ইব্রাহিম খলিল, সাতক্ষীরা সংবাদদাতা :
সাতক্ষীরা আশাশুনি বিএনপির নেতা রুহুল কুদ্দুস ও আমিনুর রহমান মিনু বাহিনীর বিরুদ্ধে জমি দখল, চাঁদাবাজি সহ লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে।
🔴 দলের নাম ভাঙ্গিয়ে, দখল, চাঁদাবাজি, লুটপাট
🔴 সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন
🔴 গড়ে তুলেছে সক্রিয় সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক
🔴 কুদ্দুস ও মিনু বাহিনীর ত্রাসের রাজত্ব
🔴 প্রান ভয়ে মুখ খোলে না সাধারণ মানুষ
🔴 প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা
জানা গেছে, ৫ আগস্ট সরকার পটপরিবর্তনের পর বিএনপির নাম ব্যবহার করে রুহুল কুদ্দুস, আমিনুর রহমান মিনু, মমিনুর রহমান মন্টু, খোরশেদ আলম, মফিজুল ইসলাম, শামীম মোস্তফা শুভ সহ তাদের সঙ্গপাঙ্গরা আশাশুনিতে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও লুটপাট চালিয়েছে।
এই চক্রটির মুল হোতা আশাশুনি বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও ৯ নং আনুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস ও তার আপন সহোদর কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সংসদের যোগাযোগ সম্পাদক আমিনুর রহমান মিনু। এদের রয়েছে একটি সক্রিয় ভয়ংকর সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক।
এলাকার নিরীহ মানুষকে তার্গেট করে সন্ত্রাসী চক্রটি মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে থাকে। দাবিকৃত চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ঘটে বিপত্তি। অনুসন্ধানে জানা যায়, ওই চক্রটি বিভিন্ন সময় তাদের দাবিকৃত চাঁদার টাকা না পেয়ে জোরপূর্বক অন্যের মৎস্য ঘের দখল, জমি দখল সহ অবলীলায় লুটপাট করে নিঃস্ব করেছে বহু মানুষকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, ৫ আগস্ট সরকার পটপরিবর্তনের পর রুহুল কুদ্দুস তার আপন সহোদর আমিনুর রহমান মিনু, মমিনুর রহমান মন্টু, ফুপাতো ভাই খোরশেদ আলম, রুহুল কুদ্দুস’র চাচাতো ভাই মফিজুল ইসলাম এবং রুহুল কুদ্দুস’র ছেলে শামীম মোস্তফা শুভ গং এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে।
এই গ্রুপের রয়েছে ভয়ংকর সন্ত্রাসী সিন্ডিকেট। আশাশুনি উপজেলার ৩ টি ইউনিয়নে ওই চক্রটি তাদের ভয়াবহ তাণ্ডব অব্যাহত রেখেছে। প্রান ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে প্রকাশ্যেই জমি দখল, চাঁদাবাজি এবং লুটপাটে চক্রটি সরব হয়ে উঠেছে। রুহুল কুদ্দুস ও আমিনুর রহমান মিনু বাহিনীর এসব সন্ত্রাসী কার্যক্রমের কারণে দলের ভাবমূর্তি ও সুনাম বহু অংশে ক্ষুন্ন হচ্ছে যা বলার অপেক্ষা রাখেনা।
অভিযোগ আছে, ৫ আগস্টের পর আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের শুভাদ্রকাটি এলাকায় হেলাল উদ্দীন নামে এক ভুক্তভোগীর নিকট থেকে চাঁদা না পেয়ে তার ৬০ বিঘা মৎস্য ঘের জবর দখল করে নেয় রুহুল কুদ্দুস ও আমিনুর রহমান মিনু বাহিনী।
যদিও পরবর্তীতে বেদখল হওয়া ওই মৎস্য ঘেরটি হেলাল উদ্দীন পুনরায় তার নিজের দখলে নিয়ে নেয়। একই উপজেলার গোকুলনগর এলাকায় ইউনুস গাজীর ১২ বিঘা মৎস্য ঘের সন্ত্রাসী কায়দায় জোরপূর্বক দখলে নেয় সন্ত্রাসী ওই চক্রটি।
আশাশুনি উপজেলার হোগলা ঘাটে যেয়ে ওই চক্রটি চাঁদা দাবি করে। একপর্যায় চাঁদা না পেয়ে সন্ত্রাসী চক্রটি ধান মাড়াই করা মেশিন সহ ট্রলারের ২২টি ইঞ্জিন খুলে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে চাঁদা পেয়ে ওই চক্রটি ১৩টি ট্রলারের ইঞ্জিন ফেরত দেয়। হোগলা ঘাটের বাজারে দোকানীদের নিকট চাঁদা চেয়ে না পাওয়ায় রুহুল কুদ্দুস ও আমিনুর রহমান মিনু গংদের নেতৃত্বে ৮/১০টি দোকানে সন্ত্রাসী কায়দায় ওই চক্রটি লুটপাট চালায়।
এ বিষয় আশাশুনি বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও ৯ নং আনুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস’র সাথে মুঠোফোনে আলাপকালে বলেন, আমার জন্মের পর থেকে আমি কোন জমি দখল, চাঁদাবাজি, লুটপাটের সাথে জড়িত নেই। এসময় তিনি কৌশলে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করেন। এ বিষয় বিএনপি নেতা আমিনুর রহমান মিনু’র সাথে মুঠোফোনে আলাপকালে বলেন, আমি এই ঘটনার কিছুই জানিনা। একপর্যায় তিনি কৌশলে এড়িয়ে যায়।
এদিকে চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস ও তার আপন সহোদর আমিনুর রহমান মিনু সহ তাদের সাঙ্গোপাঙ্গদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী সহ সুশীল সমাজের ব্যক্তিরা।